বরগুনায় জেলেদের ওপর ট্রলিং জাহাজের হামলা আহত ৫, জাল লুট

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪৮, অক্টোবর ০৪ ২০২১ মিনিট

  নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় এফবি শাহনাজ নামের একটি ট্রলারে সি হার্ট-৬ নামের একটি ফিসিং ভ্যাসেল (মাছধরা ট্রলিং) হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাহাজ থেকে লোহার পাইপ ও পাথর নিক্ষেপের কারণে ৫ জেলে আহত হয়েছে এবং ৮ লাখ টাকার জাল ও মাছ লুট করে নিয়ে যায় তারা। শনিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের গভীরে এ ঘটনা ঘটে। রোববার বেলা ১১টার দিকে পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য ঘাটে এসে এফবি শাহনাজ ট্রলারের মাঝি মো. মনির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতরা হলেন, পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড় টেংড়া গ্রামের ছালাম বয়াতীর ছেলে কবির বয়াতী (৪০) তার ভাই মনির হোসেন বয়াতী (৩০), ওই গ্রামের খালিল মোল্লার ছেলে সুমন (২৫), পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটপাথরঘাটা এলাকার মনিরের ছেলে শাহিন (২২) ও কালমেঘা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবেদ আলীর ছেলে শানু (৪৮)। জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটা মৎস্যঘাট থেকে ১৭ জন জেলে নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের জালাল ভাওয়ালীর মালিকানাধীন এফবি শাহনাজ নামের ট্রলারটি ছেড়ে যায়। পরে শনিবার সন্ধ্যার পর মাছ শিকারের জন্য জাল ফেলে অপেক্ষা করেন জেলেরা। রাত ৮টার দিকে সি হার্ট-৬ নামের একটি ট্রলিং পূর্ব দিক থেকে এসে টর্চ লাইট দিয়ে মাছধরা ট্রলারটিকে সামনে থেকে সরে যেতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই তারা প্রায় ৩০ পিচ জাল কেটে নিয়ে যায়। পরে ট্রলিং জাহাজটির পাশে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মাঝি মনির হোসেন জাহাজটিতে গেলে নাম ঠিকানা যেনে ধাক্কা দিয়ে জাহাজ থেকে ট্রলারে ফেলে দেয় এবং লোহার পাইপ ও বড় বড় পাথর নিক্ষেপ শুরু করে দেয় তারা। ট্রলারের জেলেরা আত্মরক্ষার জন্য ব্রিজের মধ্যে ডুকে পরেন। তখন ৫ জেলে আহত হয়। পাথরঘাটায় এসে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এফবি শাহনাজ ট্রলারের মাঝি মনির হোসেন বয়াতী বলেন, হঠাৎ করে মাছধরা ট্রলিটি এসেই আমাদের জাল ও মাছ নিয়ে গেছে। আমি তাদের কাছে গেলে তারা নাম ও ঠিকানা জানার পরে ধাক্কা দিয়ে জাহাজ থেকে ট্রলারে ফেলে দিয়ে পাথর ও লোহার পাইপ নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় আমার ৫ জেলে আহত হয়েছে। আমার প্রায় ৮ লাখ টাকার জাল ও মাছ নিয়ে যায় তারা। ট্রলার মালিক জালাল ভাওয়ালী মোবাইল ফোনের জানান, এ বছর সাগরের সব ট্রিপ গুলোতেই লস হয়েছে। এমনিতেই দুরবস্থার মধ্যে আছি। তার মধ্যে যদি এরকম জলদস্যুর মতো হামলা করেন তারা তবে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। আমি এর বিচার চাই। ফিসিং ভ্যাসেলের (ট্রলিং) মালিক মো. আব্দুল কাদের মোবাইল ফোনে জানান, জেলেদের ওপর হামলার ঘটনা আমার জানা নেই। আপনাদের কাছেই জেনেছি। আমার জাহাজের মাস্টারের কাছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বুঝি না কেন আমাদের ট্রলারগুলোর ওপর বারবার হামলা করেন তারা? প্রায়ই আমাদের ওপর এমন ঘটনা ঘটে আসছে। বিষয়টি নিয়ে জাহাজের মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। আসা করছি সুষ্ঠু একটা সমাধান পাবো।