বরিশালে নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরার গোপন বৈঠক ফাঁস

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪৭, সেপ্টেম্বর ৩০ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরার গোপন বৈঠক ফাঁস হয়েছে। মা ইলিশ নিধনের পথ খুঁজতে স্থানীয় অসাধু এক মৎস্য কর্মকর্তা ও বেশ কয়েজন জেলে সিন্ডিকেটের গোপন বৈঠক এবং তাদের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মিডিয়ার কাছে তথ্য এসেছে। এ নিয়ে অসহায় সাধারণ জেলেদের বিশাল একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২১ দিন মা ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। নিয়ম হচ্ছে এই সময়ে কোন জেলে নদীতে জাল ফেলতে পারবে না। এই সময়ে অভিযান পরিচালনার জন্য মৎস্য কর্মকর্তারা মাঝি মাল্লা নিয়োগ করে থাকেন। পথ চেনানো এবং নদীতে কেউ মাছ ধরে কিনা তার তথ্য দিয়ে থাকে মাঝি মাল্লারা। কিন্তু বরিশাল জেলার হিজলা ও উজিরপুর উপজেলায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও গুটিকয়েক স্থানীয় জেলে দালালের যোগসাজসে সরকারের দেওয়া কর্মসূচিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ফাঁদ পেতেছে। প্রথম দফায় হিজলা উপজেলার মৎস্য কর্মমর্তা আব্দুল হালিম তার নিজ স্বার্থ হাসিলে জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর অফিস সময় শেষে একাধিক মাঝিদের নিয়ে (জেলে) রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল হালিমের আস্থাভাজন দুই মাঝি জয়নাল বেপারির ছেলে মো. খলিল বেপারি ও ইউনুছ বেপারির ছেলে ছাইদুল বেপারি। নির্বাচিত দুই মাঝির সহচর মো. হাছান হাওলাদার (২৭) জানায়, ওরা দুজনে বরিশাল বিভাগীয় অফিসের বড় কর্তা মো. আসাদুজ্জামান ও হিজলা মৎস্যকর্তা আব্দুল হালিম স্যারকে মোট ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে মাঝি হিসেবে খলিল ও সাইদুল নির্বাচিত হয়েছে। নির্ভরযোগ্য অপর এক সূত্র জানায়, উৎকোচের পুরো টাকা ঘাটতি পুষিয়ে লাভে থাকবে বলে নিশ্চিত করেন অনেকে। এদিকে গোপণ বৈঠকের পুরো তথ্য ছড়িয়ে পড়লে হিজলার অসন্তোষ জেলেদের মধ্যে চলছে বাকবিতণ্ডা। ধারণা উৎকোচের পুরো টাকা নিষিদ্ধ সময়ে পছন্দের জেলেদের দিয়ে বিভিন্নভাবে সুযোগ দিয়ে পুষিয়ে নিবেন। অন্যদিকে মৎস্য কার্ড বিতরণের সময় আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে জেলেদের অভিযোগ ছিলো পাহাড় সমান। ২৫-২৭শ, টাকার বিনিময় তার দালালদের নির্বাচিত জেলেদের কার্ড দিয়েছেন তিনি। স্থানীয় জেলে আব্দুর রহমান (৬৫) বলেন, ওদের কারণে আমরা প্রতিবছর প্রতারিত হচ্ছি। এদিকে উজিরপুর মৎস্য কর্মকর্তা পুরানো নিয়মে স্থানীয় গুণ্ডাদের দিয়ে ঘণ্টাব্যাপী নিষিদ্ধ সময় ইলিশ শিকারের মহাযজ্ঞ চালিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান এর হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে জেলার গোটা অনিয়ম। বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন হায়দার জানান, সাধারণ জেলেদের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবেনা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল হালিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।