শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনা সচেতনতা জোরদার

কামরুন নাহার | ২৩:৪১, মার্চ ১০ ২০২০ মিনিট

মোঃ শাকিল মৃধা ॥ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি ও বাংলাদেশে আক্রান্ত তিনজন শনাক্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনা সচেতনতা জোরদারে একযোগে কাজ করবে বরিশাল স্বাস্থ্য দপ্তর, জেলা প্রশাসন ও বিএমপি পুলিশ। করোনা ভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে বলে একটি মহল গুজব ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের মতামত অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিত এখনও তৈরি হয়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এদিকে বরিশাল জেলায় ১৭শ ৫৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩শ ৫২টি কলেজে করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ করবে বরিশাল স্বাস্থ্য পরিচালক দপ্তরের স্কুল হেলথ ক্লিনিক। এব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: বাসুদেব বলে, এটি একটি ভালো পরামর্শ কারন প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারেই ২/১জন শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত। যেকারণে সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতা বার্তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আতংক দুর হবে। এতে তাদের পড়ালেখায়ও ব্যাঘাত ঘটবেনা। তবে এলক্ষ্যে আমাদের একটি স্কুল হেলথ ইউনিট রয়েছে যেখানে একজন মেডিকেল অফিসার নিয়োজিত থাকেন। আর ইউনিটটি সরাসরি পরিচালনা করেন জেলা সিভিল সার্জন। এনিয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে ইউনিট সদস্যদেরকে বলা হয়েছে স্কুলগুলোতে গ্রোগ্রাম দেয়ার জন্য এবং আমাদের চিকিৎসকরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করবে। কি ধরনের সচেতনতা প্রচার করা হবে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় যেন নতুন টিস্যু ব্যবহার করা হয় এবং ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলা হয়। কোনভাবেই যেনো রুমাল ব্যবহার করা না হয়। আর গণপরিবহনে সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করলে তাতে কাজের কিছুই হবে না। এছাড়া বাইরে থেকে আসলে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে আর বাইরে থাকা অবস্থায় নাক মুখে বারবার হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ নাক, মুখ ও কান দিয়ে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। করোনা নিয়ে সচেতনতা ব্যাপারে জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ সাহা বলেন, ইতিমধ্যে আমরা অভিভাবকদেরকে বলা শুরু করেছি এরপরও বিশেষ কোন প্রোগ্রাম আসলে অবশ্যই ঝাঁপিয়ে পড়া হবে। এদিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে যাতে কোন প্রকার গুজব ছড়িয়ে না পরে এ ব্যাপারে কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশানর মো: শাহাবুদ্দিন খান বলেন, অনলাইনে আমাদের আইসিটি ইউনিট ২৪ ঘন্টা পেট্রোলিং করছে। যদি এছাড়া আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নাম্বারগুলো প্রতিটি জনবহুল স্পট ও পাবলিক পরিবহনে দেয়া আছে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনার বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রোগ্রাম নেয়ার ব্যাপারে চিন্তা করছি, শীঘ্রই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করতে আমাদের বেগ পেতে হবে না, কারন স্টুডেন্ট কমিউনিটি কার্যক্রম মেট্রো এলাকাধীন স্কুলগুলোতে রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনার বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যাপারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যন প্রফেসর মো: ইউনুছ বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা মন্ত্রণালয় থেকে কোন বিশেষ নির্দেশনা পাইনি তবে অপেক্ষায় আছি, নির্দেশনা পেলেই দ্রুত গতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রোগ্রাম করা হবে। এদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে নগরীর মার্কেটগুলোতে যাতে স্যানেটারি পণ্য (সার্জিক্যাল মাস্ক, হ্যান্ড ওয়াশ) চড়া দামে বিক্রি করা না হয়। এনিয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো: অজিয়র রহমান বলেন, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুলিশের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে করোনা ভাইরাস কী, এটি কীভাবে ছড়ায় এবং এই রোগ প্রতিরোধে করণীয় কী, তাও বলে দিয়েছে মাউশি। করোনাভাইরাস নিয়ে অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।