কলাপাড়ায় পুলিশের লাঠিচার্জে জেলের মৃত্যু চার নৌ-পুলিশ সদস্য ক্লোজ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৪৬, সেপ্টেম্বর ২২ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরবালিয়াতলী গ্রামের জেলে সুজন হাওলাদারের (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় বানাতিবাজারে পায়রা বন্দর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মামুন-উর-রশীদ, কনস্টেবল সাজ্জাদ, সুমন ও রিয়াজকে ক্লোজ করা হয়েছে। নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম বুধবার সকালে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দুই দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার এ ঘটনায় জনরোষের অবরুদ্ধদশা থেকে উদ্ধার করা নৌ-পুলিশের চার সদস্যকে কলাপাড়া থানা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নিহত জেলে সুজনের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাবনাবাদ পাড়ের চরবালিয়াতলী এলাকায় পাঁচ জেলেসহ একটি ট্রলারকে নৌ-পুলিশের এএসআই মামুনের নেতৃত্বে ট্রলারযোগে ধাওয়া করা হয়। ঘণ্টারও বেশি ধাওয়া খেয়ে ঢোস এলাকায় দ্রুত ট্রলার ভিড়িয়ে চার জেলে কিনারে উঠে দৌড়ে পালান। কিন্তু ট্রলারে থাকা অপর জেলে সুজন হাওলাদার উঠতে পারেননি। স্থানীয়রা সুজনকে মেরে ফেলার খবর প্রচার করেন। তাৎক্ষণিক শত শত নারী-পুরুষ বিক্ষোভ সহকারে নৌ-পুলিশ সদস্যদের ট্রলারসহ ঘেরাও করে রাখে। পরে শেষ বিকেল পর্যন্ত চেষ্টা করে কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলীর নেতৃত্বে কলাপাড়া ও মহিপুর থানার অন্তত ৩০ পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে নৌ-পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ দশা থেকে উদ্ধার করেন। এসময় কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এদিকে নৌ-পুলিশের এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলেরা প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছেন। প্রত্যেক জেলে ট্রলার থেকে মাসোহারা আদায় করতেন মামুন। যিনি দিতেন না তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো। এমনকি লালুয়ায় মানুষের পারিবারিক বিরোধ কেন্দ্রিক ঘটনায় যখন তখন যে কাউকে ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করতেন। গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহের শুক্রবার সন্ধ্যার পরে মাঝের হাওলা গ্রামের আমির হোসেনকে নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে পেটান মামুন। স্বামী-স্ত্রীর সামান্য ঝগড়ার ঘটনায় আমিরকে মামুন ধরে নেন। চান্দুপাড়া গ্রামের শ্রমজীবী জাকির হোসেনকে খালে জাল পাতার ঘটনায় মারধর করেন এএসআই মামুন। রাবনাবাদ পাড়ের মূর্তিমান আতঙ্ক এই এআসআই মামুনের রয়েছে সেখানকার একটি দালাল চক্র। তাদের চিহ্নিত করতে মাঠে নামছে প্রশাসন।