করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি নেই বরিশালের তিনটি বন্দরে

কামরুন নাহার | ০১:৩৬, মার্চ ০৯ ২০২০ মিনিট

আনোয়ার হোসেন ॥ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করণের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। সড়ক, নৌ ও আকাশসহ বন্দরগুলোতে ঝুঁকির কারণ নেই বলে এ দপ্তর সুত্রে জানা গেছে। তবে বন্দরগুলো ডমেস্টিক বা আন্তুঃরুটে ব্যবহার্য হওয়ায় কোন প্রকার স্বাস্থ্য বিভাগের স্ক্যানিং ব্যবস্থা নেই। করোনায় আক্রান্তদের সুরক্ষার জন্য ইতিমধ্যে বরিশাল নগরীর রুপাতলী জাগুয়ায় এ্যপালো হাসপাতাল ২শ বেড ও শেবাচিম হাসপাতালের নতুন ২শ বেড বিশেষভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে করোনায় আক্রান্তদের জন্য। আর পায়রা পোর্ট ও তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে কর্মরত চায়না প্রবাসীদের জন্য নিজস্ব হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে। এছাড়া বরিশালের ৩৪টি থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ৬টি জেলা হাসপাতালে আরো বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য। এনিয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: বাসুদেব বলেন, বরিশালে তিনটি বন্দর রয়েছে কিন্তু প্রত্যেকটিই আন্তঃরুটের বা ডমেস্টিক যেমন বরিশাল বিমান বন্দরে দেশের মধ্যেই ব্যবহৃত হয় এরপর পায়রা পোর্টে পুরোপুরি খালাস প্রক্রিয়া চালু হয়নি এছাড়া বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর আন্তঃরুটে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেকারণে বিদেশী কিংবা প্রবাসীরা এ বন্দরগুলোতে কম ঝুঁকিপূর্ণ কারণ তারা আন্তজার্তিক পোর্টগুলোতে স্ক্যানিং হয়েই দেশের জেলা পর্যায়ে পৌছান সেক্ষেত্রে আমাদের দুশ্চিন্তার তেমন কারণ নেই। তবে আমাদের মেডিকেল টিম রয়েছে আর আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের এই নাম্বারে ফোন করলেই ০১৭৪৮৯৭৫৩১১ স্বল্প সময়ের মধ্যেই মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় স্থানে পৌছে যাবে। কিন্তু চিকিৎসাকার্যে নিয়োজিতদের জন্য কি ধরণের সুরক্ষামুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে নির্দেশনা হলো (পিপিই)পারসনাল প্রটেকশন ইকুয়িপমেন্ট (ক্যাপ, মাস্ক গাউন, হ্যান্ড গ্লোবস ও শু কাভার)পরিহিত থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর জনবলদেরকে। আর এধরণের রোগীকে যেহেতু আলাদা কক্ষে রাখা হবে সেক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীন। এদিকে চিকিৎসাকার্যে যাতে কোন প্রকার কালক্ষেপন না হয় সেজন্য চিকিৎসকদের ছুটি কমিয়ে আনাসহ সহসাই কর্মস্থল ত্যাগ করতে দেয়া হচ্ছেনা চিকিৎসক ও নার্সদের। সুত্রে জানা গেছে, বরিশালের মধ্যে পটুয়াখালী জেলায় চায়না প্রবাসী রয়েছে প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক। এরমধ্যে কলাপারা থানাধীন তাপ বিদ্যুত ও পায়রাপোর্টে কর্মরত চাইনিজ শ্রমিকরা প্রায় প্রতিদিনই কলাপারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসে। এব্যপারে হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: লেলিন বলেন, ওদেরকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রায়শই ঝামেলায় পরতে হয় কারণ ওরা ইংরেজী ভাষা বোঝেনা আর আমরাও ওদের মাতৃভাষা বুঝিনা। যখন আমরা প্রেসপিক্রপশনে ঔষধ লিখি তখন ওরা এ্যাপসের মাধ্যমে অনুবাদ করে তা ওদের চিকিৎসকদের পাঠায় মেইল করে এরপর ঔষধ সেবন করাতে পারি বা চিকিৎসা দিতে পারি। এছাড়া ওদের ইনজেকশনও দেয়া যায়না কারণ ওরা ইনজেকশন নিতে চায়না। এদিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: বাসুদেব বলেন, চায়নারা যেখানে কাজ করে কিংবা পোর্টসহ যেখান থেকেই দেশে প্রবেশ করে সেখানেই আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করে। তবে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোন খবর বা আলামত পাওযা যায়নি। এককথায় করোনা ভাইরাসের কবল থেকে এখনো আমরা মুক্ত রয়েছি তবে সর্তকতা অবলম্বনের মধ্যে রয়েছে একেকজন থেকে প্রতিজন অন্তত ১মিটার দুরত্বে অবস্থান করা। আর হাসি কাশির সময় মুখ ঢেকে নেয়াসহ বাসায় গিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ও মুখ ধোয়া এবং আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে যথাসম্ভব দুরে থাকা এবং কোন প্রকার প্রস্তুতি ছাড়া তা কাছাকাছি কিংবা সাহচার্য না নেয়া। বরিশালের হাসপাতালগুলোতে কি ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, নগরীর সদর হাসপাতালের পিছনের ভবনের দ্বিতীয় তলায় ৪টি শয্যা রেডি করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ধারণ ক্ষমতানুযায়ী ৩/৪টি বেড তৈরী করা হয়েছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য।