বিএম কলেজে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ১ম ও ২য় বর্ষের পাঠদান শুরু

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:৫৬, সেপ্টেম্বর ১৫ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝি সময় এসে বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে শুরু হয়েছে পাঠদান প্রক্রিয়া। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কলেজের ১ম ও ২য় বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে। সরকারি নির্দেশনা অনুসারে পাঠদান চলছে অনলাইনে। স্বাস্থ্যবিধি পালনে এই পদ্ধতিতে ক্লাস শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। যদিও এক্ষেত্রে নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে এ মাসের শেষদিকে স্বশরীরে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সরকারি এই কলেজটির পাঠদান প্রক্রিয়া। আর এর ফলে বাধাগ্রস্ত হয় ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ। এদিকে শেষ হয়ে যায় শিক্ষাবর্ষের সময়ও। তাই সেশনজট এড়াতে পরীক্ষা গ্রহণ ছাড়াই অটোপ্রমোশনের মাধ্যমে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ২য় বর্ষে উত্তীর্ণের সুযোগ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বছর শুরুর দিকে শিক্ষাবর্ষের মেয়াদ শুরু হলেও সাধারণ ছুটির কারণে বন্ধ ছিল সকল বিভাগের পাঠদান। পাশাপাশি স্থগিত ছিল ১ম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রমও। তবে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে খুলে দেয়া হয় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শুরু হয়েছে সরকারি বিএম কলেজের সকল বিভাগের ১ম ও ২য় বর্ষের ক্লাস। যদিও এই প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা সহায়ক হবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এছাড়া অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাক্রমে শতভাগ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিয়েও রয়েছে নানান জটিলতা। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর এ ক্ষেত্রে যতদ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক পাঠদান শুরুর বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ। ১ম বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান জানান, ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজে পড়ার ইচ্ছা ছিল শিক্ষাজীবন শুরুর প্রথম থেকেই। ১ম মেধাক্রমে সুযোগ পাওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণও হয়েছে অনেকটাই। তবে কলেজের ১ম দিনের ক্লাসটিতে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতে না পারায় কিছুটা অপূর্ণতা থেকেই যাচ্ছে। অপর শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস এ্যানি জানান, তারা মফস্বলের শিক্ষার্থী। এখানে ইন্টারনেট ব্যবস্থা অতটা কার্যকর নয়। এছাড়া অনলাইনে ক্লাস করার বিষয়টি অত্যন্ত ব্যয়বহুলও। আর এসব কারণে ইচ্ছা থাকলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ তাদের জন্য অনেকটাই ভোগান্তির। মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে শীঘ্রই স্বশরীরে ক্লাস শুরু হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এবিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক আক্তার উজ্জামান জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হলেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে স্বশরীরে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টির সম্ভাবনা তো রয়েছেই। তাই এসব কারণ বিবেচনায় তারা জুম করফারেন্সের মাধ্যমে পাঠদান শুরু করেছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইনে ক্লাস শুরুর বিষয়টি অনেকটাই জটিল এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল। তাই অনেক শিক্ষার্থী হয়ত নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। তবে তাদের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কলেজের নিজস্ব ফেসবুক গ্রুপে অনলাইনের ক্লাসগুলো রেকর্ড করে আপলোড করা হবে। যাতে পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সেগুলো সহজেই সংগ্রহ করতে পারে। এর ফলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবে বলে মতামত তার। বরিশাল বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, করোনার কারণে সারাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএম কলেজও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই শিক্ষাব্যবস্থা সচল রাখতে তারা অনলাইনে পাঠদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন। তবে করোনার পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। সংক্রমণ আরও নিয়ন্ত্রণে এলে চলতি মাসের শেষেরদিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে শ্রেণিকক্ষে স্বশরীরে ক্লাস শুরুর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. গোলাম কিবরিয়া।