উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কামরুন নাহার | ১৮:৪০, মার্চ ০৮ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের আমলেও বরিশালে এক সহকারী শিক্ষক ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতিসহ অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করার অভিযোগ বরিশালের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এমনকি বিদ্যালয়ের ক্লাশ বাদ দিয়ে তিনি প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলী বাণিজ্যের প্রতি বেশি মনোযোগী দাবী অভিযোগকারীদের। তার এ কাজে সহায়তা করছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। আর এ বদলী বাণিজ্যের অর্থ ভাগ বাটোয়ারা করে নেয় এ দুজন। তাদের নানা অনিয়ম দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যাবহার, বদলি বাণিজ্যের বিরুদ্ধে খোদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন অপর এক উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার। অভিযুক্তরা হলো, ৯নং মাকরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জাফর এবং বরিশাল সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার লায়লা জেরিন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৯ নং মাকরকাঠী প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক জাফরের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন না করে তদবির নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন। নিজের দায়িত্ব কর্তব্যের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বদলি বাণিজ্যের নামে প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ১/৩ লাখ টাকা ঘুষ নেবার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এ সব কাজে সহায়তা করে যাচ্ছেন দীর্ঘ বছর একই চেয়ার দখল করে বসে থাকা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা জেরিন আক্তার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অপরদিকে জাফর শিক্ষক সমাজ সমিতির সভাপতি হওয়ার কারনে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম যেন তার কাছে অসহায়। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মাসের ৪ তারিখে যোগদান করে লায়লা জেরিন। এরপর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সহকারী ওই উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে। নিয়ম অনুয়াযায়ী সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে তিন বছরের অধিক কেউ-ই এক স্থানে থাকতে পারবে না। কাগজ কলমে নিয়ম ঠিক থাকলেও তা মানতে নারাজ সুচতুর লায়লা জেরিন। নানান ঘটনার অনুঘটক শিক্ষক জাফর সহকারী শিক্ষা অফিসার লায়লা জেরিনকে ম্যানেজ করে বদলি বাণিজ্য করে যাচ্ছে। একাধীক শিক্ষকরা জানায়, তদবিরবাজ শিক্ষক নেতা জাফর শিক্ষকদের সুবিধাজনক স্কুলে বদলির জন্য তাগিদ দিয়ে থাকেন। এদিকে বরিশাল সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার লায়লা জেরিন নিজের স্থায়ী ঠিকানা বরিশাল সদর উপজেলা হওয়া সত্বেও তা পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন ধরে বরিশালে চাকুরি করে যাচ্ছেন। শিক্ষক সমাজ সমিতির সাইফুল বলে, “জাফর ভাই যেটা করে উপকারের জন্যই করে। এই ধরেন আমার কাছের একজন শিক্ষিকাকে ঝালকাঠী থেকে বদলি করে বরিশালে যোগদান করাতে হবে, এই যে বিষয়টা, এটাতো এক জন শিক্ষিকার উপকার করা হচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “টাকা পয়সার বিষয়টা কম বেশি তো জাফর ভাই নেবেই, তিনি সংগঠনের নেতা।” অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। স্থানীয় অভিভাবকরা আক্ষেপ করে বলে, জাফর শিক্ষক সমাজ সমিতির সভাপতি হওয়ার ফলে স্কুলের সময় বিশেষ করে তদবির ও বদলি বাণিজ্যে লিপ্ত থাকেন। তার অবহেলার কারণে অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুলে খেয়াল খুঁশিমতো স্কুলে আসে যায়। তবে, হাজিরা খাতা ঠিকঠাক করে রাখে তারা। আরও কয়েকজন অভিভাবক বলে, ‘আমরা গরিব মানুষ, ছেলে মেয়েকে লেখা পড়া করার জন্য স্কুলে দেই। স্যাররা যা কয় তাই শুনি। অনেকটা “কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই”। এবিষয় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা জেরিন আক্তারের বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে ফোন দিলে তিনি কুয়াকাটায় অবস্থান করায় তিনি এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জাফর হোসেন বলে, বরিশালে যদি আপনার কোন সিনিয়ার সাংবাদিক পরিচিত থাকে তাহলে তাদের কাছে আমার সম্পর্কে জেনে নিয়েন আমি কে ! তিনি আরো বলে, আমি আমার কর্মস্থালের শতভাগ কাজ পরিচালনা করার পরে বন্ধের দিনে আমার সংগঠনের শিক্ষকদের আমি নেতৃত্ব দিয়ে থাকি। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার লতিফ মজুমদারের বক্তব্যের জন্য তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেনি ।