আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে বাবুগঞ্জের মানচিত্র

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:০৮, সেপ্টেম্বর ১৩ ২০২১ মিনিট

  আল-আমিন, বাবুগঞ্জ ॥ আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র পাল্টে যাচ্ছে। উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের সিংহেরকাঠী, লোহালিয়া গ্রাম ও চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী, আরজি কালিকাপুর ও ভবানিপুর গ্রামের প্রায় ৫ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে রহমতপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি ছোট মীরগঞ্জ বাজার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় পার্শবর্তী এলাকায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জোয়ারের পানি ও নদীর স্রোত  বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে প্রবল ভাঙন দেখা দেয়ায় বর্তমানে ছোট মীরগঞ্জ বাজারটি আবারো ঝুঁকিতে পরেছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিংহেরকাঠি গ্রামের নদী পারের ঘর-বাড়ি অনত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে, গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। গত দুই দিনের ভাঙনে ছোট মীরগঞ্জ বাজারের একটি মসজিদ ও কয়েকটি দোকান বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ২৬টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, পানের বরজ, ফসলি জমি ও বসত ভিটা হারা মানুষগুলো দুঃশ্চিন্তায় প্রহর গুণছে। ছোট মীরগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আলা বক্স বলেন, তার প্রতিষ্ঠান চার বার ভেঙেছে। এবার ভাঙনের কবলে পড়লে পথে বসতে হবে। আমরা গ্রামবাসী অস্তিত্ব সংকটে পড়তে যাচ্ছি। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ সূর্য আলম বলেন, আমার ও বড় ভাই শাহ আলমের ঘর ভাঙন কবলে পড়েছি। এছাড়া গত দুই দিনে এই এলাকার কয়েকটি পরিবার ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ ২ কেজি চাল দিয়ে সাহায্য করেনি। আমাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। ভাঙন কবলিত সিংহেরকাঠী এলাকার ইউপি সদস্য জামাল হোসেন পুতুল বলেন, প্রতিবছরই নদী ভাঙ্গনে এলাকার ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। গত বছর ২০২০ সালে ছোট মীরগঞ্জ সম্পূর্ণটা ভেঙ্গে গেলে বাজারটি সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু এক বছর পার না হতেই আবার ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাজারটির ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্ব-মিল, মসজিদ, বসতঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। চাঁদপাশা ইউনিয়নের ময়দানের হাট বাজারের রাস্তার মাথা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙনের কবলে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ময়দানের হাট ও আরজি কালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। নদী ভাঙন এলাকার শতাধিক পরিবার গৃহ ও ভূমীহীন হওয়ার আশংকায় রয়েছে। চাঁদপাশা ইউপি চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান সবুজ বলেন, আমার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের শতাধীক পরিবার ইতিমধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে চাঁদপাশা ও রহমতপুর ইউনিয়নের মানচিত্র হুমকির মুখে পড়বে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন , মীরগঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিকে ৩ কিলোমিটার আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙন রোধে বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।