অবহেলায় ও গড়িমসিতে বেতাগীতে ২ শতাধিক শিক্ষক টিকা নেননি!

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:২৫, সেপ্টেম্বর ০৬ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধাস্ত নিয়েছে। তবে এ উপজেলায় এখনও ২ শতাধিক শিক্ষক কর্মচারী টিকা গ্রহণ করেনি। জানা গেছে, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বরিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে সব শিক্ষককে অবশ্যই টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বরগুনার বেতাগী উপজেলার ২০৫ জন শিক্ষক এখনো টিকা গ্রহণ করেননি। তারা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে টিকা গ্রহণে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ থাকায় চরমভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অকালে ঝরে গেছে অনেক শিক্ষার্থী। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষায় সরকার গত ৬ ফেরুয়ারি থেকে টিকার কার্যক্রম হাতে নেয়। সরকার শতভাগ টিকার কার্যক্রম নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের ওই নির্দেশনা সত্তে¡ও বেতাগী উপজেলার ২০৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী এখনো টিকা নেননি। উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কলেজ, মাধ্যমিক, মাদরাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট ২২৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। ১ টি সরকারি কলেজসহ ৭ টিতে ২০৭ জন, ২২ টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৫০ জন, ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিলসহ ৫৮ টি মাদরাসায় ৩৪০ জন এবং ১৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৮৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। এতে ইতোমধ্যে কলেজ পর্যায়ে ১৬৯ জন, মাধ্যমিকে ৩৬০ জন, মাদরাসায় ২৭২ জন এবং প্রাথমিকে ৬৭৪ জন শিক্ষক কর্মচারী টিকা গ্রহণ করেছে। এ উপজেলায় ১ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে ১ হাজার ৪৭৫ জন টিকা গ্রহণ করেছে। ২০৫ জন এখণ টিকা গ্রহণ করেনি। ২০ শতাংশ শিক্ষক কর্মচারি এখনও টিকা গ্রহণ করেনি। আজ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সর্বশেষ বিকেল ৪ টা পর্যন্ত জানা গেছে, কলেজ পর্যায়ে ৩৮ জন, মাধ্যমিকে ৯০ জন, মাদরাসায় ৬৮ জন এবং প্রাথমিকে মাত্র ৯ জন টিকা গ্রহণ করেছে করেনি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে টিকা নিতে গড়িমসি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানায়, এদের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকরাই টিকা নিতে বেশি অনাগ্রহী। ‘ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘ এ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৮৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্য থেকে ৬৭৪ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। বাকি মাত্র ৯ জন শিক্ষক -কর্মচারী বিভিন্ন কারণে টিকা নিতে পারেননি। তাদেরকেও দ্রæততম সময়ের মধ্যে টিকা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ‘ এ বিষয় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমান বলেন,’ উপজেলার মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদরাসার ৯৯৭ জন শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে ৮০১ জন টিকা গ্রহণ করেছে। বাকি ১৯৬ জনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ‘ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহী বলেন, ‘ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শতভাগ টিকা কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা এখনো টিকা নেননি, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত কারণ দর্শানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’