নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভোলায় ২৫০ শয্যা হাসপাতালের অর্ধশত কোটি টাকা মূল্যের দুই একর সম্পত্তির হদিস মিলছে না। কাগজপত্রে ১৪ দশমিক ৮৩ একর সম্পত্তি থাকলেও দৃশ্যমান ১২ দশমিক ৮৩ একর। অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের স্টাফ হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক ওমর ফারুক গ্র“পের দখলে বেশিরভাগ সম্পত্তি। হাসপাতালের দক্ষিণ পাশের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে রয়েছে ওমর ফারুকের মার্কেট। যেখানে রয়েছে ১০টি ওষুধের দোকান। আরও দোকান নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। দুই একর সম্পত্তি বাইরে রেখেই কৌশলে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর করিয়ে নেয় ফারুক গ্র“প।
সম্প্রতি চোরের উপদ্রব ও বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে পুরনো প্রাচীরের উচ্চতা বাড়াতে গেলে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার ব্যাঘাত ঘটবে এমন অভিযোগ এনে ওই কাজ বন্ধ রাখতে উল্টো সচিব (স্বাস্থ্যসেবা), হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা দেন ওমর ফারুক। আর এতেই কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসে। অনুসন্ধানে মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বুধবার সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান জানান, হাসপাতালে প্রতিনিয়ত বহিরাগতদের প্রবেশ, চুরি, দালালের উৎপাত বন্ধে অভিযান চালানোর জন্য জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। ১২ আগস্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় হাসপাতালের ওয়াল ব্যবহার করায় ওষুধের দোকান সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত বন্ধ রাখতে আদালতে মামলা করেন ওমর ফারুক। স্বাস্থ্য বিভাগের স্টাফ হয়ে এ মামলা তিনি করতে পারেন না।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজ উদ্দিন জানান, গত মাসের ২৩ আগস্ট ওমর ফারুকসহ পরিবারের ৫ জনের মামলার পর হাসপাতালের জমির বিষয়টি ওঠে আসে। প্রকাশ পায় ২ একর সম্পত্তি বেদখল রয়েছে, যা ওমর ফারুকরা দখল করে আছে। হাসপাতালের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে পাকা ড্রেনের ওপর তার মার্কেটের ১০টি দোকানের প্রবেশপথ তৈরি করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ।
ওমর ফারুক মামলায় উল্লেখ করেন, তাদের ৫০ বছর আগে নির্মিত দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বিবাদীরা (তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজউদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার)।