আমতলীর কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী নাঈম অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার
দেশ জনপদ ডেস্ক|১৮:০০, আগস্ট ৩১ ২০২১ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমতলীর কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী নাঈম ইসলামকে দেশীয় অস্ত্রসহ চাঁদাবাজীর সময় সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় ইউএনও অফিসের গেট সংলগ্ন পূর্ব পাশের গলি থেকে পটুয়াখালীর ক্যাম্পের র্যাব সদস্যরা টাকা ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে।
ওই রাতেই র্যাব সদস্যরা তাকে আমতলী থানায় হস্তান্তর করেছে। আমতলী থানা পুলিশ চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
সন্ত্রাসী নাঈমের গ্রেফতারের খবরে আমতলীর ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাঈম গুলিশাখালী ইউনিয়নের মুন্সি ব্রীকসের মালিক বদিউল আলম বাদল মুন্সির নিকট ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
দাবীকৃত দাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার স্ত্রী এবং মেয়ে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয় নাঈম। নিরুপায় হয়ে বাদল মুন্সি সোমবার সন্ধ্যায় ২০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে রাজি হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় টাকা নেওয়ার জন্য বাদল মুন্সি নাঈমকে আমতলী ইউএনও অফিসের গেটের পূর্ব পাশের গলিতে আসতে বলেন।
এর আগেই বাদল মুন্সি পটুয়াখালী র্যাব সদস্যদের নিকট নাঈমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পেয়ে ব্যাব-৮ পটুয়াখালী ক্যাম্পের সদস্যরা এসময় ওই স্থানের আশ পাশে অবস্থান নেয়।
রাত ৯টার সময় নাঈম তার সহযোগী সোলায়মানসহ আরো ৪-৫ জন অঞ্জাত নামা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাদল মুন্সির নিকট থেকে টাকা নিতে যায়।
বাদল মুন্সি ২০ হাজার টাকা দিলে দাবী কৃত ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চাকু দিয়ে হত্যা চেষ্টা চালায়।
এসয় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা র্যাব সদস্যরা ছুটে এসে চাঁদাবাজির ২০ হাজার টাকা এবং একটি চাকুসহ নাঈমকে আটক করেন। অন্যরা পালিয়ে যায়।
রাতেই র্যাব সদস্যরা নাঈমকে আমতলী থানায় সোপর্দ করে। নাঈম এবং তার সহযোগী সোলায়মানোর নাম উল্লেখসহ অঞ্জাত ৪-৫ জনকে আসমী করে চাঁদাবাজি এবং অস্ত্র আইনে দুটি মামলা হয়েছে।
নাঈমকে গ্রেপ্তারের খবর আমতলী শহরে ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরে আসে। নাঈম দীর্ঘদিন ধরে আমতলী শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক, চোরা কারবারী, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
তার কর্মকান্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ট। তার বিরুদ্ধে চাদাবাজী, মাদক, ছিনতাই ও নারী নির্যাতনসহ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে নাঈম একাধিকবার গ্রেপ্তাবার জেলও খেটেছেন।
মামলার বাদী বদিউল আলম বাদল মুন্সি বলেন, কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী নাঈম বেশ কয়েকদিন ধরে আমার কাছে ৫০ টাকা চাঁদা দাবী করে।
কিন্তু আমি তার দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করি। এরপর থেকে নাঈম আমাকে জীবন নাশ এবং স্ত্রী কন্যাকে তুলে নেয়ার হুমকি দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে তাকে ২০ হাজার টাকা দেই।
কিন্তু তাতেও নাঈম সন্তুষ্ট হয়নি। এক পর্যায় আমি র্যাবের কাছে অভিযোগ দেই। তিনি আরো বলেন, সোমবার রাতে নাঈম চাঁদা নিতে আমার বাসায় যায়।
আমি তাকে আবারো ২০ হাজার টাকা দেই। এরপরও আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অল্পের জন্য রক্ষা পাই।
র্যাব-৮ পটুয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক লে. কমান্ডার মোঃ শহীদুল ইসলাম (এস) বলেন, চাঁদাবাজীর সময় দেশীয় অস্ত্র এবং নগদ ২০ হাজার টাকাসহ সন্ত্রাসী নাঈমকে গ্রেফতার করে আমতলী পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার বলেন, নাঈমকে পটুয়াখালী র্যাব সদস্যরা আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে আমতলী থানায় চাঁদা ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নাঈমকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের বিঞ্জ বিচারক সাকিব হোসেন তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।