দশমিনায় সরকারি কলেজের অনিয়ম নিয়ে ছাত্রলীগের দুগ্রুপ মুখোমুখি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার সরকারি আব্দুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। পালন করা হয়েছে পৃথক কর্মসূচি।
এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করেছে বিভক্ত হয়ে পড়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্রদের লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে কলেজ বন্ধ থাকার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বায়োডাটা ফরম ফরম্যাট ধরিয়ে দিয়ে ৩০০ টাকা অবৈধভাবে আদায় করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এইচএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে দ্বিগুণ থেকে চারগুণ টাকা আদায়, অটোপাস করার শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে আত্মসাৎ ও অ্যাসাইনমেন্ট বাবাদ ৬২০ টাকা এবং প্রতি বিষয়ে সপ্তাহে ৩০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এ ছাড়া সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাবদ ৬০০ টাকা করে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে এবং মাসিক চাঁদা দেওয়ার পরও তা পরীক্ষার সময় পুনরায় আদায় করা হয় বলে সোমবার স্থানীয় ইউএনওর মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া একটি লিখিত অভিযোগে দাবি করেন ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাকিব হোসাইন।
এ নিয়ে ওই দিনই কলেজ শাখার সভাপতি মো. রাকিব হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থী কলেজ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সভা করেন।
পরিচালনা পর্ষদকে অপরারণ ও কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেয়া হয়। পরে একই দিন অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. আল ইমরান হোসাইনের নেতৃত্বে একই স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ নিয়ে উত্তেজনা লক্ষ করা গেছে ওই শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্রদের লাগাতার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
কলেজ শাখার সভাপতি মো. রাকিব হোসাইন অভিযোগ করে জানান, কলেজের অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীদের লাগাতার হুমকি দিচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন তারা। কলেজের অনিয়মের কারণে ৮ শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. আল ইমরান হোসাইন জানান, অপর পক্ষ যে অভিযোগ প্রতিবাদসভা ও অভিযোগ দিয়েছে তা মিথ্যা। তাই আমার শিক্ষক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানববন্ধন করেছি। আমাদের কর্মসূচিতে কোনো ছাত্রদল নেতা ছিল না।
এ বিষয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. খলিলুর রহমান জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিয়ম মেনে সব করা হচ্ছে। হুমকি-ধমকির ঘটনা সত্য নয়।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সরকারি আব্দুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজের সভাপতি মো. আল-আমিন জানান, হুমকি দেওয়া বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।