তৃতীয় দফায় রিমান্ডে পরীমনি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৬:০৩, আগস্ট ১৯ ২০২১ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ আদালতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর পরীমনিকে নতুন করে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আবার এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর এ আদেশ দেন। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পরীমনিকে রিমান্ডে পেল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু পরীমনির রিমান্ড চান। পরীমনির পক্ষে আইনজীবী মজিবুর রহমান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নাকচ করে রিমান্ডের আদেশ দেন। বিচারক আদেশে বলেন, নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে নায়িকাকে তিন দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করতে হবে। আদালতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পরীমনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয় বলে   জানান সিএমএম আদালতের হাজতখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম। আদালতে তোলা হলে নায়িকাকে দেখতে ভিড় জমান বিপুলসংখ্যক মানুষ। এজলাসে মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম আইনজীবীসহ সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের যদি উনাকে দেখার উদ্দেশ্য হয়, তাহলে আপনাদের দেখা হয়েছে। এখন চলে যান।’ পরীমনিকে দেখতে নানা শামসুল হক গাজী আজও আদালতে আসেন। মাদক মামলার সময় পরিক্রমা ১৮ আগস্ট: মামলায় পরীমনির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল ওই দিন। পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান নায়িকার জামিন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। এর মধ্যেই পরীমনিকে নতুন করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য ১৯ আগস্ট দিন ঠিক করেন। ১৬ আগস্ট: পরীমনির জামিন শুনানির জন্য বিশেষ আবেদন করেন তার আইনজীবী। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে আবেদনটি করা হয়। আদালত সেটি আমলে নিয়ে জামিন শুনানির জন্য ১৮ আগস্ট দিন ঠিক করে দেয়। ১৩ আগস্ট: দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরের আগে পরীমনিকে আদালতে নেয়া হয়। বেলা ২টা ৩৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। বেলা সোয়া ৩টার পর পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল। আদেশের পর পরীমনিকে নেয়া হয় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। ১০ আগস্ট: চার দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনিকে আদালতে তোলা হয়। সিআইডি তাকে আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেতে আবেদন করে। ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস চিত্রনায়িকাকে নতুন করে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। ৫ আগস্ট: বিকেলে নায়িকা পরীমনি ও প্রযোজক-পরিচালক নজরুল ইসলাম রাজকে আটকের বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমে তুলে ধরে র‌্যাব। বাহিনীটি জানায়, অ্যালকোহলের চাহিদা মেটাতে পরীমনি নিজ বাসায় ‘মিনি বার’ স্থাপন করেছিলেন। ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পরীমনির বাসার মিনি বারে বিভিন্ন বিদেশি মদ, ইয়াবা, এলএসডি ও আইস পাওয়া গেছে। পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা এ তথ্য জেনেছি। ‘আমরা জেনেছি, ২০১৬ সালে অ্যালকোহলে আসক্ত হন তিনি। চাহিদা মেটাতেই এই মিনি বার স্থাপন করেন। বিভিন্ন সময় তার বাসায় ডিজে পার্টির আয়োজন করতেন। এই মিনি বারে অ্যালকোহল সরবরাহ করতেন নজরুল ইসলাম রাজ।’ ব্রিফিংয়ের পর পরীমনি ও রাজের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে র‍্যাব। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে মামলা হয় বলে  নিশ্চিত করেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম। ওই রাতে আদালতে তোলা হয় পরীমনিকে। ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।   র‌্যাবের হাতে আটকের আগে লাইভে পরীমনি যাকে মামা সম্বোধন করেছিলেন, সেই আশরাফুল ইসলাম দীপুকেও চার দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়। ৪ আগস্ট: বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় মাদক আইস ও এলএসডি এবং বিপুল মদ জব্দের কথা জানায় বাহিনীটি। রাত সোয়া ৯টার দিকে অভিনেত্রীকে র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীমনির বাসায় অভিযান শেষ না হতেই বনানী ৭ নম্বর সড়কে প্রযোজক রাজের বাসায় অভিযান শুরু করে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা। ওই বাসা থেকে ইয়াবা, মদ ও যৌনাচারের সরঞ্জাম জব্দের কথা জানায় বাহিনীটি। রাজকেও নিয়ে যাওয়া হয় র‌্যাব কার্যালয়ে।