শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিল মাদ্রাসার শিক্ষক

কামরুন নাহার | ০০:০৩, ফেব্রুয়ারি ২৪ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিল মাদ্রাসার এক পাষন্ড শিক্ষক আব্দুর রহমান। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি শ্রেনিকক্ষে এঘটনা ঘটলেও আজ অবদি পর্যন্ত বিচার পায়নি ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর পরিবার। আহত শিশু শিক্ষার্থী বিসিসি’র পানি সরবরাহ শাখার কর্মচারী হায়দার আলির পুত্র মোঃ মোস্তাকিন হোসেন জিহাদ (১১)। সূত্র মতে, বরিশাল নগরের ২৩নং ওয়ার্ডের সাগরদি দরগাহ বাড়ির মনসুর মল্লিক হাফেজিয়া লুৎফুনন্নেছা নুরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র মোস্তাকিন হোসেন জিহাদ। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৫ই ফেব্র“য়ারি শিক্ষক আব্দুর রহমান শ্রেণিকক্ষে যেয়ে আগেরদিনের পড়া না দেখে বলতে বললে শিশু শিক্ষার্থী জিহাদ সম্পূর্ন পড়া মুখস্থ দেয়। তবে শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, আমি পড়া এটা দেইনি। তখন অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে জিহাদ বলে, হুজুর আপনার হয়তো মনে নেই, পড়া এটাই দিয়েছিলেন। সাথে সাথে তার সামনে থাকা একটি কাচের মগ দিয়ে জিহাদকে সজরে আঘাত করে শিক্ষক আব্দুর রহমান। এতে জিহাদের হাত ফুলে যায় এবং অসুস্থ হয়ে পরে। পরে জিহাদের পিতা হায়দার আলিকে খবর দিয়ে বলা হয়, আপনার ছেলের হাত দেয়ালের দরজার সাথে লেগে আঘাত পেয়েছে। তাই সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরক্ষণে জিহাদকে নিয়ে মেডিকেল গিয়ে এক্সরে করে দেখে তার ডান হাতের কুনুইর জোড়া ভেঙ্গে গিয়েছে। ছেলের মুখে নির্যাতনের বিস্তারিত জানতে পেরে হায়দার আলি মাদ্রাসায় এসে ছেলের হাত ভাঙ্গার বিচারের দাবী করেন। তখন তাকেও ভয়ভীতি দেখায় শিক্ষক আব্দুর রহমান গংরা। অভিভাবক হায়দার আলি জানান ছেলের হাত ভাঙ্গার বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছি এবং বিচার করার কথা বলে প্রায় ৬/৭ দিন কালক্ষেপণ করছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রহমানের ০১৭২২৩১৬৩২৬ এই নাম্বারে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিলে সংযোগটি বিছিন্ন করে দেয়। পরে মাদ্রাসার মুহতামিম ইসমাইল হোসেন জানান শিক্ষক আব্দুর রহমান এক শিশু শিক্ষার্থীর হাত ভেঙ্গে দিয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তিনি আরও বলেন এ ঘটনার কঠোর বিচার হওয়া উচিত। তবে শিক্ষার্থীর পিতা উপয়ান্তর না পেয়ে ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন, আমার নির্বাচনি এলাকার মধ্যে এই মাদ্রাসা ও এতিমখানা ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে বেশ কয়েক মাস যাবত নানান অপকর্ম করে আসছে। গত ২ মাস আগেও এক শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীদের রুমে আটকিয়ে নির্যাতন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঐ মাদ্রাসায় শিক্ষার নামে শিশুদের প্রায়ই নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, শিশু শিক্ষার্থীকে মেরে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি তবে অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে অপর এক সূত্র জানায়, মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন যাবত পরিচালনা পর্ষদের এর মধ্যে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটেই চলছে। যার ফলে শিক্ষার নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিনত হচ্ছে মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি।