ঝুঁকিতে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু

কামরুন নাহার | ১৩:০৩, ফেব্রুয়ারি ২০ ২০২০ মিনিট

  নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  ভেঙে পড়েছে কীর্তনখোলা নদীর উপর নির্মিত শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর (দপদপিয়া) মূল পিলারের সেইভ গার্ডার। প্রায় ৫ বছর আগে একটি নৌযানের ধাক্কায় পর থেকে সেইভ গার্ডারটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। কিন্তু গত ৫ বছরেও এই সেইভ গার্ডারটি মেরামত বা সংস্কার করতে পারেনি বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ বিষয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথাও নেই। তৎকালিন সময় জেলা প্রশাসকের উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায়ও সেতু সংস্কারে সওজকে তাগিদ দেয়া হলেও কোন উন্নয়ন ঘটেনি। এ দিকে সেতুর নিচে কোনো সঙ্কেত বাতি না থাকায় নৌযানও চলছে ঝুঁকি নিয়ে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ২০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১.৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু দিয়ে দৈনিক ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে হাজারো ভারি যানবাহন চলছে। আর সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করছে বড় বড় জাহাজ ও লঞ্চ। এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটির পর্যবেক্ষণে দেখভালে শুরু থেকেই গাফিলতি ছিল। স্থানীয়দের তথ্যমতে, প্রায়ই সেতুর ওপরের বাতি থাকে না। নিচের সঙ্কেত বাতি কয়েক বছর ধরে নেই। ৫ বছর আগে একটি কার্গোর ধাক্কায় সেইভ গার্ডার ভেঙে যায়। তবে বছরের অর্ধেকের বেশি সময় সেটা পানির নিচে থাকায় ধরা পড়েনি। কিন্তু শীতকালে পানি কমে গেলেও মানুষের চোখে পড়ে সেইভ গার্ডারের ভাঙ্গা অংশ। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসকরা। বিভিন্ন সময় উন্নয়ন সমন্বয় সভায়ও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। কিন্তু কোন সুফল আসে না। বরিশাল নদী-খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু বলেন, আমরা কয়েকবার সেতুর নিচে গিয়ে দেখেছি সেখানকার একটি পিলারের সেইভ গার্ড ভেঙে গেছে। জাহাজ থেকে সেতু রক্ষা, নদীর তীব্র স্রোত ঠেকানোর জন্যই এসব গার্ড। এটি দীর্ঘদিন আগে কোনো নৌযানের ধাক্কায় ঘটে; কিন্তু পানি থাকায় সেটি দৃশ্যমান ছিল না। তিনি বলেন, ব্রিজের নিচে কোনো সঙ্কেত বাতিও নেই। এ অবস্থায় যে কোনো মুহূর্তে জাহাজের ধাক্কায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অবশ্যই ঘটনাস্থল পরির্দশন করে উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তোলা হবে। পাশাপাশি সড়ক ও জনপথকে সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্দেশনা প্রদান করা হবে। এব্যাপারে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান বলেন, সেতুটি ১০০ বছরের টেকসই হবে এটা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জেনে সংস্কারের জন্য শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।