বরগুনায় করোনা ইউনিটে শয্যাসংকট, রোগীদের ভোগান্তি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৫৬, জুলাই ১৩ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে করোনা ইউনিটে শয্যাসংকট দেখা দিয়েছে।রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবাও ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে ৬০ জন ভর্তি। এর মধ্যে ৫৮ জনের করোনা পজিটিভ এবং ২ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে শয্যাসংকট থাকায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। করোনা রোগীদের জন্য জেলার কোনো হাসপাতালে আইসিইউর শয্যা নেই। হাসপাতালে ১১টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে। এই হাসপাতালের গুরুতর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিংবা ঢাকায় পাঠানো হয়। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য তিনজন চিকিৎসক ও আটজন নার্স দিনরাত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। একজন চিকিৎসক প্রতিদিন করোনা ইউনিটে ১৮ ঘণ্টা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। জানা গেছে, প্রতিদিন ৮০ জনের মতো করোনায় আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন এই ইউনিটের চিকিৎসকেরা। এর মধ্যে ৬০ জনকে করোনা ইউনিটে ভর্তি রাখা হয় এবং ২০ জনকে বাড়িতে আইসোলেশনে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাঁদের স্বজনদের মুঠোফোনে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই হাসপাতালে মঙ্গলবার পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১২ লাখ জনসংখ্যার এই জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৮৯টি শয্যা রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ১ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত বরগুনা জেলায় ৫৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় রয়েছেন ২৩৯ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শয্যাসংকট থাকায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ইমরান আহমেদ বলেন, জনবলসংকট থাকায় সেবাপ্রত্যাশী রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে একজন চিকিৎসক ১৮ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা না থাকায় করোনায় আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে সেখানে এখন আইসিইউর শয্যা খালি নেই। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সোহারফ হোসেন বলেন, ‘শয্যা তৈরির সরঞ্জাম এসে গেছে। আমাদের জনবলসংকট থাকায় শয্যা প্রস্তুত করতে একটু দেরি হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে শয্যাসংকট দূর হবে।’ সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, বরগুনা জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৮৯টি শয্যা রয়েছে, যা জনসংখ্যার তুলনায় খুবই নগণ্য। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে শয্যাসংকট দেখা দিয়েছে। আমি করোনা ইউনিট পরিদর্শন করেছি। শয্যাসংখ্যা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দিয়েছি।’