চলছে তোরজোড়, ঈদের আগে যেকোন সময় মহানগর ছাত্রদলের কমিটি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৭:৩৭, জুলাই ১১ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ছাত্রদলের সুপার ইউনিট খ্যাত ঢাকা মহানগর পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে একেবারে শেষ পর্যায়ের তোরজোড় চলছে। কোরবানির ঈদের আগেই এসব কমিটি ঘোষণা করতে চায় কেন্দ্রীয় সংসদ। এজন্য দফায় দফায় বৈঠকও করছেন দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। খোঁজ নিচ্ছেন প্রত্যেক পদ প্রত্যাশীর। এসব শেষ করেই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই চার ইউনিট ঘোষণা করা হবে বলে ছাত্রদলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। গত ১৬ জুন মেয়াদোত্তীর্ণ ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ছাত্রদল। ওই সময়ে ছাত্রদল জানায়, প্রতিটি ইউনিটকে সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত ও গতিশীল করে গড়ে তোলার জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ঠ নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, আন্দোলন সংগ্রামের নিউক্লিয়াস হিসেবে বিবেচিত ঢাকা মহানগর আগামীর যেকোন আন্দোলনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেই দিক বিবেচনায় রাজপথের ত্যাগী ও যোগ্যদেরকেই নেতৃত্বে আনার পরামর্শ দিয়েছেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশনায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদও চায় চার মহানগরে পরিচ্ছন্ন নেতাকে বেছে নিতে। কিন্তু এর মধ্যে বিভিন্ন সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে তাদের পছন্দ মতো কমিটি গঠনের জন্য ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে চাপ সৃষ্টি করছেন। আবার ছাত্রদলের সুপার ফাইভ কমিটিরও দুই-একজন নেতা ওই সিন্ডিকেট নির্ভর রাজনীতির কারণে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে প্রাধান্য দিতে ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে বাধ্য করতে চাইছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, যতই চাপ প্রয়োগ করা হোক আমরা অন্যায়ের কাছে মাথানত করবো না। আর নতুন এই কমিটিতে থাকবে চমক। মহানগর কেন্দ্রিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এমন নেতাদেরই মূল্যায়ন করা হচ্ছে। জানা গেছে, পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণে আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার খবরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। আলোচনায় আছেন যারা মহানগর পূর্ব: ঢাকার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট মহানগর পূর্ব। কারণ এই ইউনিটের মধ্যে রয়েছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, প্রেসক্লাব, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। বিএনপির যে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই ইউনিটের গুরুত্বও অনেক। এজন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে চায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যোগ্যতার মাপকাঠিতে মহানগর পূর্বের আহ্বায়ক হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন পূর্বের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি। মহানগরের আগে ধানমন্ডি থানা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত চারবার কারাবরণ করেছেন। সবশেষ চলতি বছরের ২৭ মার্চ জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন জ্যাকি। আলোচনায় রয়েছে মহানগর পূর্বের সাবেক সহ-সভাপতি রাফিজুল হাসান রাফিজ। সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনায় আছেন আল আমিন, আব্দুল্লাহ জামাল চৌধুরী আদিত্য এবং মো. শাকিল হোসেন চৌধুরী। মহানগর পশ্চিম: মহানগর পশ্চিমে আলোচনায় রয়েছেন পশ্চিমের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম মারুফ। এর আগে মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। আলোচনায় রয়েছে আমিনুর রহমান শান্ত। এছাড়া এই ইউনিটে সদস্য সচিব হিসেবে আদাবরের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জুয়েল হাসান রাজ, তারিকুল ইসলাম রানা এবং মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মামুনের নাম আলোচনায় রয়েছে। মহানগর উত্তর: মহানগর উত্তরে আলোচনায় রয়েছেন মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জসিম শিকদার রানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বাবু। রয়েছেন পলিটেকনিক কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা হিসেবে পরিচিত মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১২টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে এবং তিনবার কারাবরণ করেছেন। দীর্ঘদিনের সক্রিয় রাজনীতি ও রাজপথের কর্মী হিসেবে সবার সুনজরে রয়েছেন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে বলে ছাত্রদলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান। এরপরও সংগঠনের সাংগঠনিক অভিভাবক হিসেবে পরিচিত তারেক রহমানের নির্দেশনায় যোগ্যদেরকেই প্রাধান্য দেবেন তারা। মহনগর দক্ষিণ: মহানগর দক্ষিণে আলোচনায় এগিয়ে আছেন ডেমড়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজ মাহমুদ। এরপরে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পাভেল শিকদার রানা। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের সদস্য। তবে পাভেল শিকদার রানা বিবাহিত বলে অভিযোগ রয়েছে। সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ওয়ারী থানার সাবেক আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ও সাবেক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।