বাউফলে গরু খামারিদের দুঃচিন্তার অন্ত নেই

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪৮, জুলাই ০৭ ২০২১ মিনিট

মোঃ দুলাল হোসেন,নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পটুয়াখালী বাউফলের ৬শ’ গরু খামারি। খামারিরা এক বছর ধরে এসব খামারে গরু লালন পালন করে আসছেন পবিত্র ঈদুল আযহায় বেশি দামে বিক্রির জন্য। কিন্তু মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গরু বিক্রি করা নিয়ে সকল খামারি পড়েছেন চরম বিপাকে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় অধিকাংশ গ্রামে ছোট, বড় এবং মাঝারি মিলে প্রায় ৬ শত গরুর খামারে প্রায় আড়াই হাজার পশু আছে। এ সব খামারে বছরের পুরো সময় জুড়ে কম বেশি গরু লালন পালন করলেও পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে খামারীরা বেশি গরু লালন পালন করে থাকেন। এ বছরও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। সরেছমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গরুর খামার তৈরী হয়েছে। প্রতিটি খামারে ২ থেকে ৪০টি পর্যন্ত গরু পালন করা হয়েছে। গরু পালন অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় এ জনপদের মানুষ দিন দিন গরুর খামারে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন বলে অনেকে মনে করছেন। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের লতিফ ফকির পেশায় কৃষক। কিন্তু কৃষিকাজের পাশাপাশি তারা বাড়িতে পরিকল্পিত ভাবে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। প্রতি ঈদেই গরু বিক্রি করেছেন। তাদের খামারে বর্তমানে ১৩টি গরু ঈদুল আযহায় বিক্রয় করা যাবে। যার এক একটির দাম ৯০ হাজার হতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার উপরে। সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা তাই শেষ সময়ে এসে গরুকে খাওয়ানো গোসলসহ সব ধরনের কাজ চলছে খুব যতœসহকারে। কিন্তু যখনই করোনার কথা মনে হচ্ছে তখনই যেন চরম হতাশা নেমে আসছে তার মাঝে। সরেজমিনে ছোটডালিমা গ্রামে একটি গরু খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামার পরিচর্চা করার দায়িত্বে রয়েছেন তিন জন কর্মচারী। দায়িত্বরতরা গরু পরিচর্চায় বেশ ব্যস্ত। তারা ওই খামারে বেতনভুক্ত কর্মচারী। খামার মালিক আনিচুর রহমান সব কিছু দেখাশুনা করছেন । এ সময় কর্মচারী আবু বকর জানান, তাঁর খামারে মোট ৩৯টি ডেইরী ও মোটাতাজাকরণ গরু রয়েছে। করোনার কারনে গত বছর ১০ টি গরু বিক্রি করতে না পরায় লাভের মুখ দেখেননি। ক্ষতি পুরনের আশায় এ বছরও গরু মোটাতাজাকরণ করেন তিনি । তিনি বলেন, তাঁর খামারে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার থেকে ৬ লক্ষা টাকা দামের গরু রয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার গরু আছে তার খামারে। সরকার যদি লকডাউন ছাড়ে এবং বাজার ভাল থাকে, তাহলে এবছর লাভের মুখ দেখতে পারেন বলে আশা করেন তিনি। গরুর খামারে ব্যাপক ব্যয় হয়েছে। কারন গো-খাদ্যের দাম বেশী। ১ এমনকি গরুর চিকিৎসার খরচ ও বৃদ্ধি। এত ব্যয়ে গরু পালন করে যদি কাঙ্খিত দামে গরু বিক্রি না করতে পারি তাহলে কষ্টের শেষ থাকবে না। করোনা ভাইরাসের কারনে কুরবানি ঈদের হাট কেমন হবে এখন সেই চিন্তায় আছি। এমনটাই জানায়, গোসিংগার রফিক , মমিনপুরে করিম গাজী, ইন্দ্রকুলের জুয়েল ও সুলতানাবাদের ফারুক হাওলাদার। গরুর খামারী বিলবিলাসের হাবিবুল্লাহ জানান, খামারে এবারের ঈদে ১৫টি গরু বিক্রয় করা যাবে, কুরবানির ঈদে সব গরু বিক্রি করতেই হবে। তা না হলে এই গরুতে লোকসান হবে। তার মত উপজেলার অধিকাংশ গরুর খামারিরা মহাদুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্য বছরের মত এ বছরও দেশের প্রতিটি স্থানে গরু হাট বসানোর দাবি করেছেন গরু খামারীরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান বলেন, গরু পালন লাভজনক হওয়ায় উপজেলাতে দিন দিন গরুর খামার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারি করোনার কারণে গরু বিক্রি নিয়ে খামারীরা কিছুটা চিন্তায় আছেন। তবে আমি বিশ্বাস করি শেষ পর্যন্ত খামারিরা তাদের পশু সঠিক দামেই বিক্রি করতে পারবেন।