বরিশাল-লাকুটিয়া-বাবুগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা পরিণত হচ্ছে মরণ ফাঁদে!

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:২৫, জুলাই ০১ ২০২১ মিনিট

সরদার সুমন॥ বরিশাল-লাকুটিয়া-বাবুগঞ্জ ১৮ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখন  ফাঁদে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে পঙ্গু হচ্ছেন অনেকে। ভাঙ্গা এই সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। স্থানীয়রা অবিলম্বে এই সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। বিভাগীয় শহর বরিশালের সাথে বাবুগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা এবং মেহেন্দিগঞ্জের লাখ লাখ মানুষের সহজ যোগাযোগের জন্য বরিশাল-লাকুটিয়া-বাবুগঞ্জ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সড়কটি একেবারে বেহাল। এলজিইডি বরিশাল অফিস সূত্র জানায়, বরিশাল নগরীর নতুন বাজার মরকখোলা পোল থেকে লাকুটিয়া হয়ে বাবুগঞ্জ কলেজ রোড পর্যন্ত সড়কটি ১৮.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে বরিশাল নগরী অংশে ২.৫ কিলোমিটার, বরিশাল সদর উপজেলা অংশে ৭.৩ কিলোমিটার এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতাধীন সড়ক ৫.৮ কিলোমিটার। বরিশাল নগরী অংশের ২.৫ কিলোমিটার মোটামুটি ভালো হলেও বাকি ১৫.৮ কিলোমিটার সড়ক একেবারেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। সবশেষ বরিশাল সদর উপজেলা এবং বাবুগঞ্জ উপজেলাধীন ১৫.৮ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ করা হয় ২০১২-২০১৩ সালে। এরপর বাবুগঞ্জ অংশের ২ কিলোমিটার সংস্কার করা হয় ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে। এরপর থেকে এই সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। খানাখন্দে ভরা গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি একেবারে বেহাল। হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। এ কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ছোট ছোট যানবাহন কাত হয়ে পড়ে আহত হচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা। চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন কেউ কেউ। প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। এই সড়কের থ্রি হুইলার যাত্রী মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সড়কটির খুবই খারাপ অবস্থা। চলাচলের মতো অবস্থা নেই। বিশেষ করে বর্ষাকালে একেবারে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল শরীফ জানায়, স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের বরিশালে যাতায়াতের একমাত্র পথ লাকুটিয়া সড়ক। অথচ লাকুটিয়া সড়ক নিয়ে বেহাল অবস্থায় আছে এলাকাবাসী। এই সড়ক দিয়ে চলাচল খুবই মুশকিলের ব্যাপার। গাড়ি উল্টে যায়। দুর্ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগে একটি গাড়ি উল্টে একজন মারা গেছে। এই সড়ক দিয়ে এখন আর যাতায়াত করার মতো পরিস্থিতি নেই। ভ্যানচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, এই সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়। গত ৫-৭ বছর ধরে সড়কের একই হাল দেখছেন তারা। অটোচালক রহিম হাওলাদার জানান, এই সড়কে ভ্যান চালাতে নানা সমস্যায় পড়েন তারা। প্রায়ই ভ্যানের চাকা বাকা হয়ে যায়। ভ্যানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। মোটরসাইকেল চালক শহিদুল ইসলাম জানান, নতুন বাজার থেকে লাকুটিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কে খুই সমস্যা। একজন ডেলিভারি রোগী এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলে তার ডেলিভারি রাস্তায় হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। ভুক্তভোগীরা দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান। একবার সংস্কার করলে যাতে ৫-৭ বছর অনায়াসে রাস্তা ভালো থাকে, সেই দাবি জানান মাহেন্দ্র চালক মো. জুয়েল। সড়কটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করেন বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, এই সড়কটি সংস্কারের জন্য নতুন অর্থ বছরে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই অবিলম্বে সড়কের সংস্কার শুরু হবে।