উপবৃত্তি বঞ্চিত আমতলীর ২৪০৫ শিক্ষার্থী!

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:২৫, জুন ৩০ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির স্কিম পরিচালকের এক আদেশে আমতলী উপজেলার দুই হাজার ৪০৫ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি বঞ্চিত হয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি কলেজ ও ছয়টি স্কুলের কারিগরি শাখার নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত। উপবৃত্তি বঞ্চিত হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। দ্রুত ওই শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন উপবৃত্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি হাতে নেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ওই কর্মসূচির আওতায় আনা হয় স্কুল ও কলেজের অসচ্ছল, হতদরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের। ভালোই চলছিল এ কার্যক্রম। গত ৮ বছর ধরে আমতলী উপজেলার পাঁচটি কলেজ ও ছয়টি স্কুলের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীরা এ উপবৃত্তি পেয়ে আসছিল। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির স্কিম পরিচালক শরীফ মোর্তজা মামুনের স্বাক্ষরিত এক আদেশে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অথবা অন্য কোনো বোর্ড বা সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমন্বিত উপবৃত্তির কর্মসূচিভুক্ত হবে না মর্মে আদেশে উল্লেখ করেন। ওই আদেশের কারণে আমতলী উপজেলার পাঁচটি কলেজ এবং ছয়টি স্কুলের দুই হাজার ৪০৫ জন শিক্ষার্থী ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের উপবৃত্তি বঞ্চিত হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী সরকারি কলেজ, বকুলনেছা মহিলা কলেজ, ইউনুস আলী খান কলেজ, চাওড়া কারিগরি কলেজ, আলহাজ আব্দুল খালেক টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ, সরকারি একে স্কুল, এমইউ বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এমইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাঠালিয়া তাজেম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৪০৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ কারিগরি শাখার ওই শিক্ষার্থীদের যাচাই বাছাই শেষে উপবৃত্তির তালিকা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেন। কিন্তু অধিদপ্তর ওই শিক্ষার্থীদের তালিকা আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ফেরত পাঠায়। এতে পুরোপুরি স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি বঞ্চিত হয়েছেন। বকুলনেছা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সানজিদা, সুমি আক্তার ও এ্যনি তালুকদার বলেন, উপবৃত্তি না পেলে আমাদের লেখাপড়ায় সমস্যা হবে। দ্রুত আমাদের উপবৃত্তির আওতায় আনার দাবী জানাই। আমতলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান বলেন, ২০১৯-২০ অর্ধ বছরে কারিগরি শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ শাখায় দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। উপবৃত্তি বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীদের সমন্বিত উপবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জিয়া উদ্দিন মিলন বলেন, উপজেলায় দুই হাজার ৪০৫ জন কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীরা সমন্বিত উপবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় উপবৃত্তি পেত। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ওই উপবৃত্তির প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তারা উপবৃত্তি পাচ্ছে না। প্রকল্প চালু হলে তারা উপবৃত্তি পাবেন।