বরিশালে মুক্তিপাওয়া কারাবন্দিদের ভ্যান ও সেলাই মেশিন বিতরণ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৪০, জুন ২৪ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  বরিশালে কেন্দ্রীয় কারাগারে বিভিন্ন মামলায় দ-ভোগ ও হাজতবাসের পর মুক্তি পাওয়া ৪ জন আসামিকে ভ্যান এবং সেলাই মেশিন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি, সমাজসেবা অধিদফতর এবং কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার তাদের হাতে জীবিকার অবলম্বন তুলে দেন। জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, একটি চুরি মামলায় এক বছরের দ- হয় জেলার হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ভ্যান চালক বৃদ্ধ আব্দুর রহমান মাঝির। কারাগারে তার আচার-আচরণ ভালো হওয়ায় ২৬ মার্চ উপলক্ষ্যে সাজা শেষ হওয়ার কিছুদিন আগেই তাকে মুক্তির আদেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ তাকে জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি নতুন ভ্যান প্রদান করা হয়। একটি হত্যা মামলায় ২৬ বছর কারা ভোগের পর গত ১০ জুন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিপান পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দরিদ্র কৃষক আনিস মৃধার মেয়ে পিয়ারা আক্তার। পিয়ারা যখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তখন গ্রেফতার হয় সে। ১৯৯৭ সালের ২৪ এপ্রিল গ্রেফতার হওয়ার পর দরিদ্র পরিবারের মেয়ে পিয়ারার খোঁজ নেয়নি কেউ। গ্রেফতারের কিছুদিন পর তার বাবার মৃত্যু হয়। ৩৭ বছর বয়সে গত ১০জুন মুক্তি পায় সে। তার জীবনের ঘটনবলী শুনে জেলা প্রশাসক তার জীবিকার অবলম্বনের জন্য একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন। স্বামী হত্যা মামলায় ৪ বছর কারাভোগের পর গত ৩ মাস আগে জামিনে মুক্তি পায় জেলার হিজলা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ৩ সন্তানের জননী চট্টগ্রামের মেয়ে খালেদা আক্তার। তার স্বামী শহিদ মোল্লা ২০১৮ সালে পতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়। ওই মামলায় আসামি করা হয় তাকে। ৪ বছর হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তার মানবেতর জীবন যাপনের কথা জেলা প্রশাসককে জানান তিনি। জেরা প্রশাসক তার জীবন জীবিকার জন্য তাকেও একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন। একটি মাদক মামলায় ৩ বছর সাঁজাভোগের পর গত ১ মাস আগে মুক্তি পায় বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা আয়শা আক্তার (৩১)। অন্ধকার জীবন ত্যাগ করে আলোর পথে আসতে চায় সে। এ কারণে জেলা প্রশাসক তার জীবন জীবিকার জন্য একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ, কারা সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক, সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস দাস, প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে জেলা প্রশাসক সহ কর্মকর্তারা কারাভ্যন্তর পরিদর্শন করেন। এ সময় কারাগারের বাসিন্দাদের সার্বিক খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।