পায়রা সেতু উদ্বোধন সেপ্টেম্বরে, উচ্ছ্বসিত দক্ষিণের মানুষ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪৩, জুন ০৪ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক।। দেশের সর্ব দক্ষিণের কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ চালু এখন সময়ের ব্যাপার। এই মহাসড়কের লেবুখালীর পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধন সহ আনুষাঙ্গিক কাজ। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝী সময়ে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়ার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করছে চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।     শিগগিরই সেতু চালুর খবরে খুশী স্থানীয়রা। ঢাকা (যাত্রাবাড়ি)-মাওয়া-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের (এনএইচ-৮) ১৯২তম কিলোমিটার এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহসড়কের ২৭তম কিলোমিটারে লেবুখালীর পায়রা নদীর উপর সব শেষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪শ’ ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড এন্ড ব্রীজ কোম্পানী লিমিটেড। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০জুন পর্যন্ত। তবে তার আগেই আসন্ন সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝী সময়ে সেতু চালু করতে তৎপরতা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন সকালে ওই সেতু নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর।   এ সময় তিনি  বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এই সেতু খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সর্ব দক্ষিণে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে।     যা বর্তমান সরকারের একটি নতুন মাইলফলক। পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, পায়রা সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪শ’ ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। এটি ফোরলেন বিশিষ্ট সেতু। মূল সেতুর ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদীর উভয়প্রান্তে মোট ১ হাজার ২শ’ ৬৮ মিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক, টোলপ্লাজা, প্রশাসনিক ভবন, ইলেক্ট্রিফিকেশনসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজের ৮৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।   এখন চলছে শেষ মুহূর্তের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল জানান, নৌপথ সচল রাখার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার কথা বিবেচনা করে পায়রা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল স্টেট পদ্ধতিতে। এটি নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্নফুলী সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায়। পায়রা সেতু বরিশালের সব চেয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত আকর্ষণীয় বলে তিনি জানান।   শিগগিরই সেতু উদ্ধোধনের খবরে উচ্ছ্বসিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এই সেতু চালুর মধ্য দিয়ে লেবুখালী ফেরিঘাটে হয়রানি ও ভোগান্তির অবসান হবে আশা পরিবহন শ্রমিকসহ যাত্রীদের।   ২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে পায়রা সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। যা দেশের সর্ববৃহৎ। বিদ্যুতের আলোয় রাতে নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারনা হবে পায়রা সেতুতে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন।