তজুমদ্দিনের চরাঞ্চলে ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে ভোলার তজুমদ্দিনের পাঁচটি বিচ্ছিন্ন চরের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
এসব অধিকাংশ চরগুলোতে কোন সাইক্লোন সেল্টার না বা উঁচু দালান না থাকায় দূর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় নিতে না পারার শঙ্কায় আছে চরের বাসিন্দারা।
আবহাওয়া বা ঘূর্ণিঝড়ের আগাম কোন বার্তাও জানেনা এদের অনেকেই। যারফলে জীবন ঝুঁকির পাশাপাশি গবাদিপশু ও গৃহস্থলি মালামাল নিয়ে চরবাসী রয়েছে চরম উৎকন্ঠায়।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় মেঘনা নদীর স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় উপজেলার চর-নাছরিন, চর-মোজাম্মেল, সিডার চর, চর শাওন ও চর জহিরউদ্দিনের নিন্মাঞ্চল।
এসব বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে কোন টেকসই বাঁধ নির্মিত না হওয়ায় ঝড় জলোচ্ছাসে ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা।
আজকের স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট জোয়ারের ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে এসব চরের প্রায় ২০ পরিবার।
এতে প্রায় অসংখ্য ঘড়-বাড়ির আঙ্গিনা পানিতে ডুবে গেছে। অনেকের গরু-ছাগল ও মহিষ জোয়ারে ভেসে গেছে। পুকুরের বাঁধ ডুবে মাছ চলে গেছে। বিকেল ৫ টায় জোয়ারের পানি নেমে গেলেও বেশকিছু এলাকায় পানি আটকে আছে।
সিডার চরের বাসিন্দা “চরের মানুষ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র এর খবর জানেই না। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া বা দুর্যোগকালীন সচেতন থাকার বিষয়ে কোন সংস্থা আগে থেকে প্রচার করেনি।
ফেসবুকে ঘূর্ণিঝড়ের কথা জেনে ব্যক্তি উদ্যোগে আমরা কয়েকজন কিছু মানুষকে বলি। পরে তারা গবাদিপশুগুলো মুজিব কেল্লায় নিয়ে রাখে।”
চর নাছরিনের বাসিন্দা মোঃ শাকিল জানান, বিকেলে সিপিপি’র কয়েকজন সদস্য মুখে মুখে ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা দিচ্ছে।
এখানে উচু কোন সাইক্লোন সেল্টার না থাকায় চরের বসবাসরত মানুষগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। সংকেত বাড়ার সাথে সাথে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন।
চর মোজাম্মেলের আরিফ হোসেন জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তজুমদ্দিন সিপিপি’র সহকারী পরিচালক মাজহারুল হক জানান, চর নাসরিনে সিপিপির একটি টিম আজ (মঙ্গল বার) বিকেল থেকে কাজ শুরু করেছে।
প্রতিটি চরের মসজিদের মাইকে মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হবে। এখন স্থানীয় সতর্ক সংকেত এর সময় মুখে মুখে প্রচারের বিধান, পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় প্রচারণা চলবে। দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী সময়ে মোকাবেলা করতে সিপিপি প্রস্তুত আছে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার পল্লব কুমার হাজরা জানান, এসব চরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ে সতর্কতা প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সার্বিক পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টি রাখছে। যেসব স্থানে আশ্রয় কেন্দ্র নেই সেখানে উঁচু ও নিরাপদ স্থানে আশ্র্র্রয় নিতে বলা হচ্ছে।