আমতলী ও তালতলীতে ১৫৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:২৭, মে ২৫ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস। আমতলী-তালতলী উপকুলের সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন অঞ্চলের লক্ষাধীক মানুষ ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের আতঙ্ক থাকলেও সাগর ও নদী পাড়ের জেলে পল্লীর মানুষের নেই সচেতনতা। উপকুলের নদীতীরবর্ত মানুষকে রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আমতলী ও তালতলী উপজেলায় প্রস্তত রাখা হয়েছে ১’শ ৫৯টি সাইক্লোণ সেল্টার। সাগরে ৬৫ দিন মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকায় জেলেরা নিরাপদে রয়েছে। তারপরও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলে ও সাধারণ মানুষকে নিরাপদে থাকতে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে।ইয়াসের প্রভাবে উপকুলীয় অঞ্চলে সোমবার থেকে ভ্যাবসা গরম বিরাজ করছে। ওইদিন হালকা বাতাসের সঙ্গে সন্ধ্যায় বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী বুধবার সকালে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস উপকুলীয় অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে বলে জানান সহকারী পরিচালক আমতলী ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী কর্মকর্তাকে এম মাহতাবুল বারী। আমতলী ঘুর্ণিঝড় কর্মসূচী অফিস সুত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দুরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীতে ২ নম্বর হুসিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ৬৫ দিন মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকায় সাগর ও নদী সংলগ্ন মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাসহ জেলেরা নিরাপদ স্থানে রয়েছে। তারপরও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখতে দুই উপজেলায় ১’শ ৫৯ টি সাইক্লোণ সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আমতলীতে ১১১টি এবং তালতলীতে ৪৮টি। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই হাজার পাঁচ’শ সেচ্ছাসেবক। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্র ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম। উপকুলের মানুষকে সচেতন করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। এদিকে দু’উপজেলার সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে অন্তত লক্ষাধীক মানুষ ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকুলীয় এলাকায় প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। তবে সোমবার সন্ধ্যায় হালকা বাতাসের সাথে বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দু’উপজেলার সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে বালিয়াতলী, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, আমতলী পৌরসভার ফেরিঘাট, শ্মশাণঘাট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী, গুলিশাখালীর জেলে পল্লী, পঁচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, মৌপাড়া, গাবতলী, চরপাড়া, তালতলী, খোট্টারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, নলবুনিয়া, ফকিরহাট, নিদ্রাসকিনা ও আমখোলাসহ উপকুলের অধিকাংশ এলাকায় সাইক্লোণ সেল্টার নেই। সাইক্লোণ সেল্টার না থাকায় এ সকল অঞ্চলের অন্তত লক্ষাধীক মানুষ ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের ঝুঁকিতে রয়েছে। তালতলী ফকিরহাট বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. ছালাম হাওলাদার বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব থেকে রক্ষায় মাছ ধরা ট্রলার ও জেলে নৌকা কিনারে নিরাপদে আশ্রয় যেতে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাগর পাড়ে জেলেদেও নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে ইউনিয়ন পরিষদের সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপকুলীয় এলাকায় তেমন সাইক্লোণ সেল্টার না থাকায় সাগর সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঝুঁকিতে বসবাস করছে। সহকারী পরিচালক আমতলী ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী কর্মকর্তাকে এম মাহতাবুল বারী বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দুরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ইয়াস মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। মানুষকে নিরাপদে আনতে ইতিমধ্যে সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগামী বুধবার সকালে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস উপকুলীয় অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় মানুষকে সচেতন ও জেলেদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলার সকল সাইক্লোণ সেল্টার খোলা রাখা রয়েছে। সাইক্লোণ সেল্টারে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে মানুষ যাতে থাকতে পাড়ে সেই উপযোগী করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদেরকে শুকনো খাবার মজুদ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।