ভয়াবহতায় ‘সার্স’কেও ছাড়িয়ে গেল ‘করোনাভাইরাস’

কামরুন নাহার | ০১:৩৩, ফেব্রুয়ারি ১০ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ ধ্বংসযজ্ঞে ভয়াবহতার দিক থেকে সার্স ভাইরাসকেও ছাড়িয়ে গেল করোনা ভাইরাস। ২০০৩ সালে চীন সহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সিভিয়ার অ্যাকুইটি রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। আর নতুন করোনা ভাইরাসে প্রাণহানিতে এরইমধ্যে সার্সকে টপকে গেছে করোনা। এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে ৮১১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন গতকাল রবিবার সকালে জানিয়েছে, নভেল করোনা ভাইরাসে দেশটির মূল ভূখণ্ডেই এ পর্যন্ত ৮১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হংকং ও ফিলিপিন্সে মারা গেছে আরও দুইজন। কেবল শনিবারই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯০ জন। ছয় সপ্তাহ আগে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ধরা পড়ার পর এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। নতুন করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল বলে পরিচিত চীনের হুবেই প্রদেশেই এই ভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন ৭৮০ জন। আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মোট মৃত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১১ জনে। একজন ছাড়া অন্যদের প্রাণহানি চীনের মূল ভূখণ্ড ও হংকংয়ে ঘটেছে। করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মোট সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সিংহভাগই চীনা নাগরিক। গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। করোনা ভাইরাস সাধারণত ছড়ায় কফ, হাঁচি, কাশির মধ্য দিয়ে। এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মলের মধ্য দিয়েও ছড়িয়ে থাকে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা যে ব্যাপক, তার প্রমাণও পাওয়া গেছে উহানে। রয়টার্স লিখেছে, শনিবার নতুন করে ২ হাজার ৬৫৬ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সংখ্যা আগের কয়েক দিনের চেয়ে কম। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সর্বোচ্চ পর্যায় পেরিয়ে এসেছে কি না- সে বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না বলেই মনে করছেন মিশিগান ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজির অধ্যাপক জোসেফ আইসেনবার্গ। প্রসঙ্গত, ২০০২-০৩ সালে করোনা ভাইরাস পরিবারের আরেক সদস্য সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমে (সার্স) মৃত্যু হয়েছিল সব মিলিয়ে ৭৭৪ জনের। সার্স সে সময় ছড়িয়ে পড়েছিল চীন সহ বিশ্বের দুই ডজন দেশে, আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ১০০ জনের কাছাকাছি।