সামাজিক অভিশাপগুলোর বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন

কামরুন নাহার | ০১:২৪, ফেব্রুয়ারি ১০ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুটিন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিদ্যমান কিছু সামাজিক অভিশাপের বিরুদ্ধে সতর্ক নজর রাখার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার এসব সামাজিক অভিশাপ নির্মূল করতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে মাদক, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির মতো কিছু সামাজিক অভিশাপ রয়েছে। আমি এসব বিষয়ে আপনাদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ’র (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ২০১৯-২০২০ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। সমাজের বিদ্যমান সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান পরিচালনায় সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি। অপরাধ বিরোধী এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। শেখ হাসিনা বলেন, সমাজকে রক্ষা করার জন্য এই ধরণের অভিশাপ নির্মূল করা জরুরি। কারণ আমরা আমাদের সন্তানদের জীবন ধ্বংস করার কোন সুযোগ দিতে চাই না। তিনি একইসঙ্গে বলেন, তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে তেমনই একটি আধুনিক ও সুসজ্জিত বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার তরুণদের মেধা, জ্ঞান এবং শক্তি দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে চায়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সশস্ত্রবাহিনীকে এমন ভাবে উন্নত করতে চাই যাতে তাঁরা যেকোন দেশে যেকোন পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষায় কাজ করে যেতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পৃথিবীর যেখানে কাজ করেছে সেখানেই সুনাম অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক সেবা দিয়ে বিভিন্ন দেশে স্থানীয় মানুষের হৃদয় জয় করেছে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী। অনুষ্ঠানে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজের কম্যাড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্লাহ স্বাগত বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ১২৫ জন, নৌ বাহিনীর ৩৪ জন এবং বিমান বাহিনীর ২২ জন ছাড়াও ২১ দেশ থেকে আগত ৫৪ জন বিদেশী অফিসার সহ মোট ২৩৫ জন শিক্ষার্থী এ বছর এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। উল্লেখ্য, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যপর্যায়ের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের কমান্ড স্টাফ হিসেবে ভবিষ্যতের গুরু দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজে’ সেনাবাহিনীর ৪৪টি, নৌবাহিনীর ৩৮টি এবং বিমানবাহিনীর ৪০টি স্টাফ কোর্সে ৫ হাজার ২৫৩ জন সাফল্যের সঙ্গে কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এরই মধ্যে ৪২টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ১ হাজার ১৬৫ জন অফিসারও এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েশন করা অফিসারদের হাতে সনদ তুলে দেন। ২১টি দেশের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সিয়েরা লিয়ন, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তানজানিয়া, তুরস্ক, উগান্ডা এবং জাম্বিয়া। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের পিএসও সহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।