স্বামীকে ফাঁসাতে গর্ভের ভ্রুণ হত্যা করে ফ্রিজে রাখলেন স্ত্রী

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০০:২১, মে ২১ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্বামীকে ফাঁসাতে নিজ গর্ভের ৫ মাসের ভ্রুণ হত্যা করে অন্যের ফ্রিজে রেখেছেন সুমাইয়া নামে এক গৃহবধূ। গতকাল বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বেলুহার গ্রামের সিরাজ ভূইয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বিল্বগ্রাম এলাকার ছত্তার ঘরামীর ছেলে জামাল ঘরামীর তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের একটি শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের কিছুদিন পরে ওই সন্তান মারা যায়। এর ৬ মাস পরে পারিবারিক অশান্তির কারণে বাবার বাড়ি চলে আসেন সুমাইয়া। এরপর থেকে বাবার বাড়িতেই থাকেন তিনি। কয়েক মাস আগে আবার গর্ভবতী হন সুমাইয়া। গর্ভবতী হওয়ার প্রায় ৫ মাস পর নিজ গর্ভের ভ্রুণটি নষ্ট করে মৃত অবস্থায় প্রসব করেন। এরপর ভ্রুণটি একটি প্লাস্টিকের কৌটার ভিতরে করে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে পাশের বাড়ির আব্দুর রশিদ ভূইয়ার ফ্রিজে রেখে আসেন সুমাইয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আব্দুর রশিদ ভূইয়ার মেয়ে ফ্রিজ পরিস্কার করতে গিয়ে প্লাস্টিকের কৌটাটি দেখেন। তার সন্দেহ হলে তিনি কৌটাটি খুলে ভিতরে মানুষের আকৃতির রক্তের ভ্রুণ দেখতে পান। বিষয়টি সম্পর্কে সুমাইয়াকে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজের গর্ভের ভ্রুণের কথা স্বীকার করেন। গর্ভের ভ্রুণ হত্যাকারী সুমাইয়া সাংবাদিকদের জানান, ‘তিন বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক অশান্তির কারণে আমি বাবার বাড়িতে চলে আসি। কিন্তু বর্তমানে আমার স্বামী আমাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। এজন্য আমি আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করি এবং প্রসব করাই। এরপর ওই ভ্রুণটিকে আদালতে হাজির করার উদ্দেশ্যে পাশের বাড়ির ফ্রিজে রাখি। ফ্রিজের মালিক আব্দুর রশিদ ভূইয়ার স্ত্রী ও মেয়ে জানান, গত ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে রোজার মধ্যে একটি প্লাস্টিকের কৌটা ফ্রিজে রাখেন সুমাইয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রিজ পরিস্কার করতে গিয়ে প্লাস্টিকের কৌটাটি দেখে সন্দেহ হয়। পরে কৌটাটি খুলে ভিতরে মানুষের আকৃতির রক্তের ভ্রুণটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীকে জানানো হয়। এলাকাবাসী জানান, গর্ভের সন্তান বা ভ্রুণ নষ্ট করা আইনত অপরাধ। স্বামীকে ফাঁসাতে সেই ভ্রুণ অন্যের ফ্রিজে রাখেন সুমাইয়া। বিষয়টি লোকজনের মধ্যে জানাজানির পরে প্লাস্টিকের কৌটাটি নিয়ে বাথরুমে ফেলে দেন সুমাইয়া। এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানতে পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।