দরকারি বিষয় ভুলে যাওয়া রুখবেন যেভাবে

কামরুন নাহার | ০১:১৫, ফেব্রুয়ারি ১০ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ খুব গুছিয়ে রেখেছেন যে জিনিসটা, সেটা খুঁজতেই নাজেহাল হতে হয় অনেক সময়। সন্তানের স্কুল ফি দেওয়ার তারিখ, অফিসের ডেডলাইন, বাড়ির বয়স্ক সদস্যের চেক আপের তারিখ, ক্রেডিট কার্ডের পিন, নিজের জরুরি নথিপত্র, প্রিয় বন্ধুর জন্মদিন... এক মাথায় এত কিছু খুঁটিনাটি রাখতে গিয়ে প্রায়ই ভুলে যান সব। এমনটা হয় বলে বাড়তি উদ্বেগের কারণ নেই। ভুলে যাওয়ার ‘অসুখ’ আজ ঘরে ঘরে। বিভিন্ন বয়সে ভুলে যাওয়ার কারণ কিন্তু নানা রকম। সে ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও স্বাভাবিকভাবেই আলাদা। ১০-১৮-র কম বয়সে মস্তিষ্কজনিত অসুখ না থাকলে একাগ্রতার অভাবেই এই সমস্যা হয়। ১৯-৬০ বছর বয়সে নানা দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ও লাইফস্টাইলের জন্যই অনেক সময় প্রয়োজনীয় জিনিস ভুলে যায় মানুষ। ৬০-এর ঊর্ধ্ব বয়সে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে। মাঝে মাঝেই ভুলে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হলে তা কিন্ত ডিমেনশিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়াও বেশ কিছু কারণে স্মৃতি কমে যায়। তাহলো... * কোন কারণে মাথায় আঘাত লাগলে আর তার ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে এই সমস্যা হতে পারে। * দিনের পর দিন স্নায়ুর কোন রোগের ওষুধ বা ঘুমের ওষুধ খেলে এই ধরনের প্রবণতা বাড়ে। * শরীরে ভিটামিন কম থাকলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা থাকে। * উচ্চমাত্রায় থাইরয়েড থাকলেও ভুলে যাওয়ার সমস্যা থাবা বসাতে পারে। * দীর্ঘদিন ধরে অপরিমিত মদ্যপানও স্মৃতি হারানোর একটি কারণ। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে যা করা যায়: * ইলিশ মাছ, পাম অয়েল এসবে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই অনেকেই এসব খেয়ে বুদ্ধি তথা স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপদেশ দেন। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারণার তেমন বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই। তাঁরা বরং যোগাসন, মেডিটেশনে বেশি ভরসা করতে বলেন। * কোন সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকলে একাগ্রতা বাড়ে। ফলে মনোযাগী হতে সুবিধা হয়। * বিশেষ করে গান বা বাদ্যযন্ত্র বাজালে মস্তিষ্কের কোষ বেশি সক্রিয় থাকে। তাই গবেষকদের দাবি, এসব কাজে মস্তিষ্ক বেশি সচল থাকে। * নিয়মিত ধাঁধার সমাধান, শব্দছক এসবের অভ্যাস বজায় রাখলেও মস্তিষ্ক সচল থাকে। মনোবিদদের মতে, তরুণ প্রজন্মের ভুলে যাওয়ার কারণ একসঙ্গে অনেক কিছু মনে রাখা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এটা ‘ইনফরমেশন ওভারলোড’। আজকাল এত কিছু মনে রাখতে হয় যে, অনেক সময়ই আমরা খেই হারিয়ে ফেলি। সেখান থেকেই ভুলে যাওয়ার শুরু। এ ছাড়া এসবের সঙ্গেই যোগ হয় স্ট্রেস, অবসাদ, নানা দিক একা সামলানোর চাপ। এগুলো আজকাল খুব স্বাভাবিক। তাই অসুখ বলা য়ায় না। তবে যদি বার বার ভুলে যেতে থাকেন বা উত্তরোত্তর এই ভুলে যাওয়া বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।