যে কারণে অবৈধভাবে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে

কামরুন নাহার | ০১:০৬, ফেব্রুয়ারি ০৯ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে আড়াই লাখের বেশি বিদেশি কাজ করছেন। এর একটা বড় অংশ অবৈধভাবে কাজ করছেন। বিদেশিদের বেশিরভাগই কাজ করেন তৈরি পোশাক খাতে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, কাজের জন্য ভিসা, অনুমতির জটিলতা ও দেশীয় মালিকদের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতার কারণে পর্যটন ভিসা নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশিরা কাজ করছেন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, দেশে আন্তর্জাতিক মানের বহু শিল্প-কারখানা থাকলেও তা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল নেই। আর দক্ষ জনবল তৈরির বড় কোনও প্রতিষ্ঠানও সেভাবে দেশে গড়ে ওঠেনি। যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন। কিন্তু যে পরিমাণ দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়, তা পাওয়া যায়নি। ফলে বিদেশিদের নিয়োগ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পোশাক শিল্পে সবচেয়ে বেশি বিদেশি কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের অধিকাংশ পর্যটন ভিসায় এসে অবৈধভাবে কাজ করছেন। এজন্য প্রতিবছর বিদেশে পাচার হচ্ছে ২৬.৪ হাজার কোটি টাকা। দক্ষ জনবল সংকটের পাশাপাশি বিদেশি কর্মীদের বৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অনুযায়ী, বিদেশি একজনকে বৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভিসা সুপারিশপত্র, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ভিসা সংগ্রহ, বিদেশি নাগরিক নিবন্ধন, কাজ করার অনুমতির জন্য আবেদন, নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেওয়াসহ আটটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেন করতে হয়। গড়ে ২৩-৩৪ হাজার টাকা দিতে হয় বিভিন্ন বিভাগে। শিল্প-কারখানায় বিভিন্ন পদে কাজ করার মতো দেশীয় দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক প্রেসিডেন্ট সালাম মোর্শেদী। তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আমাদের এখানে আন্তর্জাতিক মানের ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টে টপ টু বটম আমাদের নিজস্ব শিল্প গড়ে উঠেছে। এতে নতুন নতুন বিষয়ে টেকনিশিয়ান প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই তুলনায় দক্ষ মানুষ আমরা দেশে পাই না।’ বিশ্বের ৪৪টির বেশি দেশ থেকে আসা বিদেশিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত রয়েছে বলে জানিয়েছে টিআইবি। ২১টির বেশি খাত বা প্রতিষ্ঠানে এসব কর্মী কাজ করছেন। পর্যটন ভিসায় এসে কাজ করার ক্ষেত্রে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি করেছে টিআইবি।