ভোলায় করোনা মহামারীতে জনগণের পাশে নেই জনপ্রতিনিধিরা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৫:৪৪, মে ০১ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  ভোলায় করোনা মহামারীতে জনগণের পাশে নেই জনপ্রতিনিধিরা। মাত্র কয়েকমাস আগেও যাঁরা জনগণের পরম বন্ধু হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছিলেন তাঁদের দেখা মিলছে না করোনার কবলে পড়া দুস্থদের পাশে। জনপ্রতিনিধিদের এমন কর্মে হতাশ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বিগতদিনে নির্বাচনের আগে বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক (সম্ভাব্য) জনপ্রতিনিধিরা নিজেদেরকে সমাজসেবক হিসেবে প্রচার করে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। গেল বছর করোনার সময়ও তাঁরা মাস্ক বিলি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। আবার বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই সরকারি চাল, ডাল ও তেল দুস্থদের মাঝে বিলিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নিজেই সামান্য কিছু অনুদান দিয়ে সমাজসেবা করেছেন। তবে এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরকারি কোনো সহযোগীতা না আসায় নেই কোনো তৎপরতা। পাঙ্গাশিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক শরিফ বাঘা বলেন, কয়েকমাস আগেও যাঁরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বাজার ঘাট ও গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন। দোয়া চেয়েছেন আমাদের। কোনো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার হাত মাথায় রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন। আবার চায়ের দোকানে গণহারে চা পান করিয়ে আপ্যায়ন করেছেন, তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না এ বিপদের সময়ে। দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের চায়ের দোকানদার রিপন বলেন, মাসখানেক আগেও চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীরা এসে জনগণকে চা পান করিয়েছেন। আজ সে জনপ্রতিনিধিদের দেখাই যাচ্ছে না। ইলিশা গ্রামের আনোয়ারা বলেন, গত বছর করোনার সময় চাল, ডাল, তেল ও আলু পেয়েছেন। অনেকেই সাহায্য করেছেন। তবে এবার আর কোনো সাহায্য পাননি। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ কোনো খোঁজই নেননি। একই কথা জানালেন চার মনসা গ্রামের ভিক্ষুক মনেজানা বেগম। তিনি জানান, আগে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা দেখা হলে হাতে টাকা গুজে দিয়ে কত কথা জিজ্ঞেস করতেন। এখন দেখা হলেও কোনো কথা বলেন না তাঁরা। কিছু দেয়ার ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নেন। ধনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, সরকারি সহযোগিতা এখনও আসেনি। তাই দেয়া হচ্ছে না। ব্যক্তিগত সাহায্য কতটুকুই বা করা সম্ভব?পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম জহির জানান, গতবছর তিনি অসহায় দরিদ্র অনেকের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন। তবে আসন্ন ঈদে গরীবদের জন্য কিছু করা হবে বলেও জানান তিনি। চর সামাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ ও দক্ষিণ দিঘলদী ইউপি চেয়ারম্যান মুনসুর জানান, ব্যক্তিগত তহবিল থেকে যে ত্রাণ দেওয়া হয়। তা ইউনিয়নের সকল অসহায় দরিদ্র মানুষ পায়না। তারা জানান, সকল ইউপি চেয়ারম্যান সরকারি বরাদ্দের দিকে চেয়ে আছেন। রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিজানুর রহমান দাবী করে বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে তাঁর ইউনিয়নের অনেক অসহায় দুস্ত মানুষদের সাহায্য করা হয়েছে। তবে ওই ইউনিয়নের অনেক অসহায় দুস্ত মানুষদের অভিযোগ করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে তাঁরা কোনো সহযোগিতাই পায়নি।