বরিশালে পুরোনো সিলেবাসে পরীক্ষা… হালিমা খাতুন স্কুলের হল সুপারসহ ৫জনকে অব্যাহতি

কামরুন নাহার | ০১:০৪, ফেব্রুয়ারি ০৫ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রে বহুনির্বাচনী পরীক্ষা ভুল প্রশ্নপত্রে নেয়ায় নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই কেন্দ্রের ৪ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ড পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের পর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সাময়িক বরখাস্তকৃত হলেন- হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম এবং পরীক্ষার দায়িত্বে থেকে অব্যহতিপ্রাপ্তরা হলেন ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাসুদা বেগম ও মো. সাইদুজ্জামান এবং সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শাহানাজ পারভীন শিমু ও শেখ জেবুন্নেছা। এদের মধ্যে শেখ জেবন্নেছা ও মাসুদা বেগম এমপিওভূক্ত এবং শাহনাজ পারভীন শিমু ও মো. সাইদুজ্জামান খন্ডকালীন শিক্ষক বলে স্কুল সূত্র নিশ্চিত করেছে। বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস জানান, হালিমা খাতুন কেন্দ্রে কেজুয়াল পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্রের ৪টি প্যাকেট পাঠানো হয়েছিলো। কেন্দ্রে ২টি প্যাকেট খোলা হয়েছে, বাকী ২টি প্যাকেট ইনটেক রয়েছে। সে হিসেবে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়া পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কোনভাবেই ৪০ জনের বেশী হবে না। তিনি জানান, বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর আব্বাস উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বোর্ডের উপ-সচিব আব্দুর রহমান ও সেকশন কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম। এই কমিটিকে পরবর্তী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, এসএসসি পরীক্ষা একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়। স্পর্শকাতর পরীক্ষা গ্রহনে সংশ্লিস্ট হল সুপার এবং ওই কক্ষের ৪ পরিদর্শক দায়িত্বে অবহেলা, গাফেলতি এবং খামখেয়ালী করেছে। এ কারনে তাৎক্ষনিক হল সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অপর ৪ কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষককে চলতি এসএসসি পরীক্ষার সকল দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জানা গেছে, ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহনের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) প্রশান্ত কুমার দাসকে প্রধান করে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা নাসরিন। কমিটিকে পরবর্তী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার এসএসসি’র প্রথম দিন বাংলা প্রথমপত্রের বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুটি কক্ষে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রে নৈর্ব্যত্তিক পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি ধরা পড়লে শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ভুলের বিষয়টি স্বীকার করে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়া কোনো শিক্ষার্থী যাতে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সেই প্রতিশ্র“তি দেন। ওই কেন্দ্রে নগরীর জগদ্বিশ সারস্বত গার্লস স্কুল সহ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।