ডায়েরিয়া রোগীর দখলে বামনা হাসপাতাল; সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার সেবিকা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৫:৩৮, এপ্রিল ১৯ ২০২১ মিনিট

মোঃ ওমর ফারুক সাবু, নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরগুনার বামনা উপজেলায় কয়েকদিন ধরে ডায়েরিয়ার প্রকোপ ভয়াবাহ আকার ধারন করেছে। বর্তমানে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন ডায়েরিয়া রোগীদের দখলে। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড সংকটের কারনে রোগীরা এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন মেঝেতে। এদিকে মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। গত ১৯ এপ্রিল ২০২১ সোমবার বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেজিস্ট্রার থেকে জানা যায় সকাল ১১:০০ পর্যন্ত ডায়েরিয়া আক্রান্ত হয়ে নতুন চারজন রোগী ভর্তি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে সর্বোমোট ৬৪ জন্য এবং ১লা এপ্রিল থেকে মোট ৯৪ জন ডায়েরিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এ সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ডায়েরিয়া বিভাগ বহু আগেই রোগীতে ভর্তি হয়ে আছে। বর্তমানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কোন সিট খালি না থাকায় বারান্দা ও মেঝেতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে আসা সাহেরা বেগম (৩৫) নামে এক রোগী জানান, কয়েকদিন ধরে পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েও অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি হয়ে স্যালাইল সংকট থাকায় বাহির থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও অতিরিক্ত দামে স্যালাইন ক্রয় করেন। তবে এখন স্যালাইনসহ যাবতীয় ঔষধ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেই সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে “দৈনিক আমাদের সময়” পত্রিকায় ৯ এপ্রিল “ডায়েরিয়া স্যালাইনের তীব্র সংকট” সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সুলতানা নাদিরা (প্রয়াত সাংসদ গোলাম সবুর টুলু এর স্ত্রী) ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বরগুনা জেলায় ১৫ হাজার স্যালাইন সহায়তা দিয়েছেন। সেখান থেকে বামনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী ভিত্তিতে ২শত স্যালাইন আনা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মুহাম্মাদ মনিরুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন- এপ্রিলে ডায়েরিয়া সমস্যা এটা কমন এবং সে মোতাবেক আমাদের স্যালাইন মজুদ ছিল। কিন্ত এবছর আকস্মিক রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা কিছুটা স্যালাইন সংকটে পড়েছিলাম তাই রোগীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে। পরে কর্তৃপক্ষকে চাহিদা দিয়েছি তাও আমাদেও মাঝে শিঘ্রই পৌছে যাবে। সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন (এমপি) তিনিও পর্যাপ্ত সংখ্যক স্যালাইন বরাদ্দ দিয়েছেন। হঠাৎ ডায়েরিয়া বেড়ে যাওয়ার কারন কি- এর জবাবে তিনি বলেন- প্রচন্ড গরম, নদীতে নোনা জল ও পানির স্তর নেমে যাওয়া, অনাবৃষ্টি এছাড়া রমজান মাসে সরাদিন রোজা রেখে অতিরিক্ত তৈলক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহনের কারনে মূলত ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা রেড়ে গেছে। রোগীদের সেবার বিষয় প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- আমাদের ম্যানপাওয়ার সীমিত এর উপর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেসনের কার্যক্রম, রমজান মাস চলছে তার উপর ডায়েরিয়া রোগী আকৎস্মিক রেকর্ডসংখক বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের সেবা দানে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছি, তারপরও আমরা ডাবল শিপটিং ডিউটি করছি এবং ডাক্তারাও যথেষ্ট চিকিৎসা সহায়তা বাড়িয়ে সেবার কাজ অব্যহত রাখছেন।