বাকেরগঞ্জে ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে সরকারি অফিসে হামলা

কামরুন নাহার | ০০:৪৯, ফেব্রুয়ারি ০৫ ২০২০ মিনিট

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়ার নেতৃত্বে নেতা- কর্মীরা হামলা ও ভাংচুর করেছে। হামলাকারীরা এসময় পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা দিয়ে চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায় গিয়ে তালা খুলে আটক শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করেন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে জনশুমারির জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৩শত কর্মী নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেই বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক গত ৩ জানুয়ারি সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন প্রাপ্তদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার নিয়োগ প্রাপ্তদের তালিকা উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২ টার সময় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া, সহ-সভাপতি আলকাস হোসেন, মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও সোহেলসহ ১৫-২০ জন তালাবদ্ধ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সামনে গিয়ে টাকার বিনিময় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নিয়োগ দিয়েছে বলে কর্মকর্তাকে গালাগাল করেন। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের চেইনম্যান শামসুজ্জামান অফিসের সামনে পৌঁছামাত্র ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তার কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে তালা খুলে রুমের ভেতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং দেয়ালে সাটানো জনশুমারির নিয়োগ প্রাপ্তদের নামের তালিকা ছিড়ে ফেলে দেয়। হামলাকারীর রুম থেকে বের হয়ে চেইনম্যান শামসুজ্জামানকে রুমে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে চাবি ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এ খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায় গিয়ে তালা খুলে শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামলাকারী ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাধবী রায় ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মুহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা অর্থের বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নিয়োগ দিয়েছেন। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে জামায়াতের লোকজন নিয়োগ দিয়েছেন এটা মেনে নেয়া কাম্য নয়। চেইনম্যান সামসুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলে, হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তার কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে রুমে ভাঙচুর করে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখে। মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়ার কাছে জিজ্ঞাসা না করে কি করে ইউএনও জনশুমারি গণনার জন্য বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নিয়োগ দিয়েছেন এসব বলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গালাগাল করে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাধবী রায় পরিসংখ্যান অফিসে হামলা-ভাংচুরের বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনশুমারি গণনার জন্য তিনি জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের কে কোন দলের সেটা দেখা আমার বিষয় নয়। পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ভাংচুরের জন্য তিনি আইনগত পদক্ষেপ নিবেন বলেও জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম চুন্নু পরিসংখ্যান অফিসে কতিপয় দুর্বৃত্ত হামলা-ভাংচুর চালিয়েছে বলে স্বীকার করেন। জনশুমারি গণনার জন্য কতজন লোক এবং কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে কিছুই জানায়নি বলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালামের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অফিসে হামলা ভাংচুরের ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিলে তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।