ভোটেও নেই, আন্দোলনেও নেই বিএনপি

কামরুন নাহার | ২৩:৪৯, ফেব্রুয়ারি ০২ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল বলে দাবি করেছে দলটি। এই লক্ষ্য নিয়ে দলটি সিটি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা করেছে। আর এই প্রচারণাগুলোতে প্রতিদিনই দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরাও অংশ নিয়েছে। কিন্তু ভোটের দিন বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে মাঠে দেখা যায়নি। এমনকি নেতাকর্মীদেরকে ভোট কেন্দ্রেও দেখা যায়নি। এদিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই গত শনিবার রাতেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনের ফলাফলকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে গতকাল রোববার ঢাকায় হরতাল ডাক দেয় বিএনপি। আর এই কর্মসূচিতেও মাঠে ছিলেন না দলটির নেতাকর্মীরা। শুধুমাত্র নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা, আর কোথাও বিএনপির নেতাকর্মীরা দেখা যায়নি। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলেও পুলিশের ৩০ মিনিটের আল্টিমেটামে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই তারা রাস্তা ছেড়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভিতরে চলে যান। এছাড়া হরতাল কর্মসূচিকে মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাড়ির চাপ স্বাভাবিক দেখা গেছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা, ভোট এবং বিএনপির কর্মসূচি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। হরতাল কেমন চলছে- জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, চার দিকে গাড়িঘোড়া চলছে না। দোকানপাট বন্ধ আছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করছে। জনগণ আমাদের ডাকা হরতালে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। এটাই আমাদের পাওয়া। তবে ভোটের বিষয়ে দলটির অভিযোগ, ভোট শুরুর আগের রাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থীদের এজেন্টদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। অনেক ভোটারদেরও হুমকি দেয়া হয়েছে, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য। আর ভোট শুরুর আগেই ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। কোনো কোনো কেন্দ্রে স্বয়ং প্রিজাইডিং অফিসার নিজেই বিএনপির এজেন্টকে বের করে দেয়ার সহায়তা করে। সিটি নির্বাচনের সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনের দিন অনেক ভোট কেন্দ্রে ধানের শীষের কোন এজেন্ট যায়নি। আবার অনেক এজেন্টকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি, অনেক কেন্দ্রে আবার ধানের শীষের এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিএনপি মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নিজ কেন্দ্রেই (গোপীবাগ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে) কোন এজেন্ট ছিলোনা। এবিষয়ে গত শনিবার ভোট দেয়ার পরে ইশরাক হোসেন বলেন, আমি জানতাম। এ বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি এজেন্ট না থাকে তাহলে এজেন্ট দেয়া হবে। এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাঁধা দেয়া হয়েছে। যারা এই বাঁধা অতিক্রম করে ভোট কেন্দ্রে গিয়েছে তাদের সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বের করে দিয়েছে। বিএনপির ভোটার কেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে ঢাকা উত্তরের দলটির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, বহু কেন্দ্রে তিনি এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ভোট দেয়া হয়ে গেছে বলে বিদায় করে দেয়া হয়। পরে ওই ভোটারের ভোট তাদের পছন্দ মত প্রার্থীকে দেয় আওয়ামী লীগের লোকজন। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে বিএনপির ভোটাররা ইভিএমে ধানের শীষ প্রতীক খুঁজে পায়নি। ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের সময় বিএনপির অনেক ভোটারকে বাধা দেয়া হয়েছে।