সৈকতে বালুর ভাস্কর্যে ভাষা আন্দোলন-মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৩৯, মার্চ ১৪ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু এবং জন্মশতবর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে কুয়াকাটার বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে বালু ভাস্কর্য। সৈকতে জিরো পয়েন্টের ১০০ গজ পূর্বদিকে প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রশস্ত এ ভাস্কর্যে রয়েছে ১৯৫২ সালের বাঙালির ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দাবিসহ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা পুলিশের উদ্যোগে নির্মিত এ ভাস্কর্যটি আগামী ১৭ মার্চ উদ্বোধন করা হবে। এ ভাস্কর্য নির্মাণে কাজ করছে খুলনা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের ছয় শিক্ষার্থী। গত ৯ মার্চ থেকে কাজ শুরু করে তারা। এরইমধ্যে বালু দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্রের ঠিক মাঝখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। তার একপাশে ভাষা আন্দোলনের মিছিল। ধারাবাহিকভাবে ছয় দফাসহ মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট আর ভাস্কর্যের উপরে-নিচে বালু দিয়ে লেখা হয়েছে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, আমার সোনার বাংলা, জায় বাংলা, আমার মায়ের ভাষা, রাষ্ট্র ভাষ বাংলা চাই’। প্রথমবারের মতো কুয়াকাটা সৈকতে নির্মিত বালুর ভাস্কর্যটি দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয় বাসিন্দাসহ বেড়াতে আসা পর্যটক ও অগণিত দর্শনার্থী। ঢাকার বনশ্রী থেকে কুয়াকাটায় আসা পর্যটক সিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতি বছরই এখানে আসা হয়। আগে যা দেখেছি তা নষ্ট হয়ে গেছে। এবার এসে দেখলাম সৈকতে বালু দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা খুবই ভালো লেগেছে। এ থেকে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছুই জানাতে পারবে। আর সৈকতে ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীরা এই ভাস্কর্য দেখে আনন্দিত হবে।   ভাস্কর্য দেখতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল গফ্ফার মুন্সি বলেন, ভাস্কর্যে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কুয়াকাটার সৈকতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করায় পর্যটকসহ স্থানীয় শিক্ষার্থীরা দেখে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। ভাস্কর্য নির্মাতা দলের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী সানি কুমার দাস নিলয় বলেন, ‘রাজশাহী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থী দিন রাত সমান তালে এ ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ করছি। এ ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্রে রেখে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা আর বিজয় পর্যন্ত বাংলাদেশের সব ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। ভাস্কর্য নির্মাতা দলের প্রধান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী অনুপম কর বলেন, ছয়জন শিক্ষার্থী গত মঙ্গলবার থেকে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে এ কাজটি শুরু করেছি। আশা করি ঠিক সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পিপিএম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ১৭ মার্চ এ ভাস্কর্যটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত পর্যটকসহ স্থানীয়দের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।