বিএম কলেজের শিক্ষক তরিকুল’র বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ

কামরুন নাহার | ০১:৪৭, জানুয়ারি ৩০ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তিনি সরকারী বেতনভুক্ত শিক্ষক। বরিশাল বিএম কলেজের বাংলা বিষয়ে পড়ান। কলেজ থেকে যে বেতন পান তার ১০গুন তিনি আয় করছেন কোচিং ব্যবসা করে। তাও কলেজ সময়ে। সকাল ৯টা থেকে তিনি ব্যাচ পড়ান শুরু করেন। চলে রাত পর্যন্ত। তবে এর চেয়ে গুরুতর অভিযোগ তার নৈতিক স্ফলন নিয়ে। নারী ঘটিত কয়েকটি ঘটনায় জড়িয়েছেন তিনি। সহজ সরল শিক্ষার্থীদের উপর হামলে পড়েন প্রায়শইঃ। বাদ যান না ছাত্রীরাও। শনিবার তার নির্যাতনের শিকার হয়ে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হন। তিনি নিজেও শিক্ষার্থীর উপর নির্যাতনের কথা স্বিকার করে বলেন, সামান্য চড় থাপ্পড় দিয়েছি, এর বেশি কিছু নয়। কোচিংবাজ এই শিক্ষকের নাম তরিকুল ইসলাম। তিনি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক। কলেজ অধ্যক্ষ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। গত সোমবার তার কোচিং গৃহে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে চোখ চড়কগাছ হয়ে উঠে। সকাল ৯টায় তিনি অবলীলায় কোচিং করে যাচ্ছেন। অক্সফোর্ড মিশন স্কুলের পাশে শিখণ কোচিং সেন্টারের একটি রুম ভাড়া নিয়ে তিনি প্রকাশ্যেই কোচিং চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি ব্যাচে ২০জন করে শিক্ষার্থী। ৫টি ব্যাচ পড়ান। ছাত্র প্রতি হাজার টাকা নেন তিনি। অর্থাৎ ১০০জন ছাত্রের কাছ থেকে মাসে তিনি লাখ টাকা আয় করেন। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ কোচিং করানোর সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উপর হাত চালায়। গত শনিবার সরকারী সৈয়দ হাতেমআলি কলেজের এইচ.এস.সি ১ম বর্ষের ছাত্র নাহিদ হোসেন অভিকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাও নেয়। পরিবার থেকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে না চাইলেও হাসপাতালের ভর্তির কাগজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তার হাতে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াফি ও তাজবি নির্যাতনের শিকার হন। ছাত্রের গায়ে হাত তোলার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানায়, পড়াতে গেলে চড় থাপ্পড় ২/১টা মারতেই হয়। এটা নির্যাতনের মধ্যে পড়ে না। একজন সরকারী কলেজের শিক্ষক কিভাবে কলেজ সময়ে কোচিং করান তা নিয়ে কলেজেই নানা গুঞ্জন রয়েছে। ক্লাশে তিনি প্রায়শই অনুপস্থিত থাকে। সম্প্রতি তিনি কলেজে একটি নারী ঘটিত ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছিলো। ওই ছাত্রীর পিতা বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক তাকে এ ঘটনায় রক্ষা করেন। তরিকুল ইসলামের বিষয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভের সাথে জানায়, শিক্ষক তরিকুল ইসলামের বিষয়ে তার কাছে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে একবার নারীঘটিত কেলেংকারীতেও জড়িয়েছেন বলে জানায়। তিনি তার বিষয়ে মন্ত্রনালয়কে অবহিত করেছেন। শিক্ষার্থী নির্যাতন ও কোচিং বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি দ্রুত একশনে যাবেন বলেও জানায়।