বরিশালের চার উপজেলায় আ’লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি….. আটকে আছে জেলা সম্মেলন

কামরুন নাহার | ০০:৪৩, জানুয়ারি ২৯ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২০১২ সালের ২৫ ডিসেম্বর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ সদস্য নিয়ে গঠিত বরিশাল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি এখনও বহাল আছে। তিন বছর মেয়াদী এই কমিটি সাত বছর অতিক্রম করেছে। পাঁচজনের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করায় চারজন দিয়ে কাগজে-কলমে চলছে কমিটির কার্যক্রম। অথচ বিভাগীয় সদর হিসেবে স্থানীয় রাজনীতিতে বরিশাল সদর উপজেলার গুরুত্ব অনেক বেশি। একই অবস্থা বিরাজ করছে জেলার হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও বানারীপাড়া উপজেলায়। যা নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। দলের একাধিক সূত্রের দাবি, সম্মেলন পরবর্তী কমিটিতে পদ-পদবি বন্টন এবং কমিটির নানা বিষয় নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা ঐকমতে পৌঁছতে না পারায় এই সংকট চলছে। ফলে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনও করা যাচ্ছেনা। গত ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মার্চের মধ্যে জেলা সম্মেলন করার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বরিশাল-৫ (বরিশাল সদর-সিটি এলাকা) সংসদ সদস্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নিস্ক্রিয়তায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রাণ হচ্ছে সদর উপজেলা। এ কমিটি নিস্কিয় থাকলে তার প্রভাব পরে গোটা জেলায়। সদরে বর্তমানে যে কমিটি রয়েছে তার কোন তালিকাও কেন্দ্রে নেই। তাই এ কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তারা কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড কমিটি গঠণ করলে সেগুলোও বৈধ হবেনা। কেন্দ্র থেকে আগামী মার্চের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার আগে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে। নতুন কমিটিতে যাতে যোগ্য নেতৃত্বে আসে সে বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সূত্রমতে, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়েছেন বর্তমান সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি ও সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেল। কমিটির অপর তিন নেতার মধ্যে জামাল গাজী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম মহিলা আওয়ামী লীগ ও মাহাতাব হোসেন সুরুজ জেলা আওয়ামী লীগের পদ নিয়ে রাজনীতি করছেন। চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি বলেন, সাত বছর ধরে কেবল সভাপতি ও সম্পাদকই আছেন উপজেলা কমিটিতে। তারা পদ ধরে রাখতে বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে পকেট কমিটি গঠণ করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য কোন মতামত নেয়া হচ্ছেনা। তার সমর্থকদেরও কমিটিতে রাখা হচ্ছেনা। শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন তালুকদার বলেন, সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেই বললেই চলে। বর্তমান কমিটি পুনরায় পদ ধরে রাখতে তারা ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নে পকেট কমিটি গঠণ করছেন। উপজেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কথা স্বীকার করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। এখন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কাউন্সিল করার চেষ্টা করছি। এরপর উপজেলা কমিটির কাউন্সিল হবে। সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেল বলেন, কাজে ব্যস্ত থাকায় সময় হয়নি। তাই কমিটি করা যায়নি।