বরিশাল সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস….. কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একইস্থানে বছরের পর বছর কর্মরত

কামরুন নাহার | ০০:৩৬, জানুয়ারি ২৯ ২০২০ মিনিট

মোঃ শাকিল মৃধা ॥ সরকার যখন দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক এর বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে বরিশাল সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিয়ম বহির্ভূতভাবে একই কর্মস্থলে বছরের পর বছর কর্মরত রয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, বদলি বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করে চলেছে তারা। এ যেন দেখার কেউ নেই। সূত্র মতে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম তালুকদার ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করার পর থেকে অধিকাংশ সময় ছুটিতে কাটিয়েছেন। আর এই সুযোগে অসাধু ওই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িয়েছে একের পর এক অপকর্মে। জানা গেছে, বরিশাল সদরে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রয়েছে মোট ৯ জন। এর মধ্যে ৩ বছরের অধিক সময় ধরে কর্মরত আছে লায়লা জেরিনা, নাসিমা বেগম, সাবিনা আক্তার, খাইরুন নাহার। এছাড়া বাকি কর্মকর্তারা ২/১ বছর যাবত কর্মরত আছে। এ ব্যাপারে তিন বছরের অধিক সময় বরিশাল সদরে কর্মরত থাকা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাবিনা আক্তার বলেন, আমি তিন বছরের অধিক সময় বরিশালে কাজ করি, প্রয়োজনে আরো বেশি বছর কাজ করবো তাতে সাংবাদিকের দরকারটা কি? যদি এটা দোষের হয় তা আমার কর্তৃপক্ষ দেখবে, আমি সরকারি চাকুরী করি সাংবাদিকের এখানে কোন দরকার নেই। যত পারেন নিউজ করেন, পারলে আমার চাকুরী খুইয়ে দেখেন বলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। কর্মকর্তাদের পাশাপাশি তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী মাহবুব আলম খান ও শফিক নূর ৩ বছরের অধিক সময় ধরে কর্মরত আছে একইস্থানে। ফলে দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চলছে ব্যাপকহারে দূর্নীতি। যদিও সচরাচর দেখলে মনে হয় কোন দূর্নীতির চিহ্নও নেই। কিন্তু একটু অনুসন্ধান করলেই দূর্নীতির সব চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে যায়। জানা যায়, সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিয়ম অনুসারে উপজেলার ২শ ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মনিটরিং করবে। কিন্তু সরেজমিনে তেমন কোন মনিটরিং করা হয় না, কালেভাদ্রে মনিটরিং করা হয়। তবে প্রতিবছর জানুয়ারি, ফেব্র“য়ারি, মার্চ এই তিন মাস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলী করা হয়। এই বদলী বাণিজ্যে অনেকটা সময় ব্যয় করে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ। আর এ কাজে আর্থিক লেনদেন করা অন্যতম হোতা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মাহবুব আলম খান। অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, ভোলা থেকে এক শিক্ষিকা বরিশাল সদরে স্বামীর বাড়ী এলাকায় বদলির আবেদন করেন। সেখানে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দায়িত্বে ছিলেন লায়লা জেরিনা আক্তার। অফিস সহকারী মাহবুবের মাধ্যমে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বদলি করে তাকে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম তালুকদার দেশ জনপদকে বলেন, ২০১৯ সালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির সময়কাল আমি ছুটিতে ছিলাম। কি হয়েছে তা বলতে পারবো না। তবে একইস্থানে আমার অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ৩ বছরের অধিক সময় কর্মরত আছে সত্য। তাদের বদলি করাটা ডিজি অফিসের ব্যাপার। আমার কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগদানের বিষয়টি চিঠি দিয়ে চাওয়া হয়। আমিও জানিয়ে দেই। আমার কাজ এর বেশি নয়। এদিকে ঘুষ এবং দূর্নীতির ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, শিক্ষকদের বদলী এখান থেকে হয়। এতে যদি কেউ আর্থিকভাবে সুবিধা নিয়ে বদলী বাণিজ্য করে তাহলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ আমার নিকট কোন অভিযোগ দেয়নি।