বিতর্কিত সংগঠনের দখলে কাউনিয়ায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যালয়

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০০:৫৫, জানুয়ারি ২৮ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর কাউনিয়া থানাধীন মড়কখোলার পোল এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যালয় দখল করে গড়ে উঠেছে পদক্ষেপ নামের একটি বিতর্কিত সংগঠন। এ ধরনের সমাজমুখী পুলিশী কার্যক্রমের পাশাপাশি এমন একটি বিতর্কিত সংগঠন কিভাবে একই সাথে পরিচালিত হচ্ছে, সে সম্পর্কে কিছুই জানে না দ্বায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বাশার। সরেজমিন সূত্রে দেখা গেছে, মড়কখোলার পোল এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যালয়ের সাইনবোর্ডের পাশেই টানানো হয়েছে “পদক্ষেপ” নামের স্থানীয় একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড। অথচ অত্র জায়গাটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাত। কিন্তু “কমিউনিটি পুলিশিং” পুলিশের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এবং জায়গা না থাকার কারণে ওই ফুটপাতেই গড়ে উঠেছে কার্যালয়। যে কারণে বিসিসিও বাধ সাধেনি। তবে সম্প্রতি ওই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যালয়ে “পদেক্ষপ” নামের একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে কেন লাগানো হয়েছে সে ব্যাপারে কিছুই জানে না এলাকাবাসী। শুধু তাই নয়, নাম সর্বস্ব ওই সংগঠনের কি কাজ সে সর্ম্পকেও কোন ধারনা নেই তাদের। এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নত মানের পুলিশী সেবা নিশ্চিত করতে যেখানে সরকারের এমন একটি সেবামূলক সংগঠন রয়েছে, সেখানে নাম সর্বস্ব এসব সংগঠনের কোন দরকার নেই বলে জানান এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করে বলেন, অবৈধভাবে জায়গা দখল করতে সংগঠনটি এখানে বসানো হয়েছে। এ ধরনের সংগঠন কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যক্রমে বিতর্ক তৈরী করবে। এ ব্যাপারে দ্বায়িত্বরত পুলিশের এসআই বাশার বলেন, আমি সাইনবোর্ড লাগানোর ব্যাপারে কিছুই জানি না। কিন্তু এ নিয়ে স্থানীয়রা জানান, এটা ঢাহা মিথ্যা। উনি এখানে প্রায়ই আসেন এবং সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে তাও দেখেছেন। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যালয়ে “পদক্ষেপ” সংগঠনের সাইনবোর্ড লাগানোর ব্যাপারে সংগঠনটির মুখপাত্রের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে আগেও “পদক্ষেপ” সংগঠনটি ছিলো। এটি একটি সমাজ ও আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত সংগঠন। তাহলে এটি কমিউনিটি পুলিশং এর কোন অংঙ্গ সংগঠন কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, না। এটার সাথে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কোন সম্পর্ক নেই। এদিকে “পদক্ষেপ” সংগঠনটি ঘিরে মড়কখোলার পোল এলাকায় জনশ্র“তি রয়েছে, বিএনপি নেতা ওয়াহেদ মিয়ার পরিচালনায় চলছে সংগঠনটি এবং সংগঠনের নামে পোলের দুপাশে বিসিসি’র জায়গায় অবৈধভাবে দোকান উঠিয়ে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভাড়ার নামে প্রত্যেকটি দোকান থেকে লাখ লাখ টাকা অগ্রিমও নেয়া হয়েছে। কিন্তু বিসিসি মেয়র খাল অবমুক্তকরণ কার্যক্রম হাতে নিলে ওই স্থানের সকল অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছিল। অথচ ক্ষতিগ্রস্থরা দোকানের নামে দেয়া অগ্রিম টাকা এখনো ফেরত পায়নি “পদক্ষেপ” সংগঠনের হোতাদের থেকে এমন তথ্য জানিয়েছে একাধিক ভুক্তভুগী। অপর একটি সূত্র জানায়, সংগঠনটির উদ্যোগে স্থানীয় সালিশির ব্যবস্থাও করা হয় কমিউনিটি পুলিশিং দপ্তরে বসেই। আর সালিশির নামে ঘুষ ত্রাসও কায়েম করেছে “পদক্ষেপ” সংগঠনটি। কাউনিয়া বিসিক এলাকার রিকশা শ্রমিক করিম মাতবর তার মেয়ে-জামাইর বিবাদ মেটাতে “পদক্ষেপ” সংগঠনের কাছে যায় পরিবারটি। কিন্তু বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষ থেকে ঘুষ নিয়ে কোন মিমাংসা না করে কালক্ষেপণ করছে বলে জানানো হয়। অপরদিকে সংগঠনটির দালালরা কমিউিনিটি পুলিশিং এর সদস্য দাবী করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থনৈতিক সুবিধাও। এহেন কর্মকান্ডের কারণে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম ওয়ার্ডবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কারণ কোনটা আসল আর কোনটা নকল তা নিয়ে গোলক ধাঁধাঁয় রয়েছে স্থানীয়রা। অপরদিকে, বিট পুলিশিং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের চেয়েও আরো কার্যকর হওয়ায় বিট পুলিশিং নিয়ে বেশ তোড়জোড় চলছে। তাই কমিউনিটি পুলিশিং দপ্তরে কার্যক্রম ঝিমিয়ে পরার কারণে কমিউনিটি পুলিশিং দপ্তরটি এখন সাইনবোর্ড সর্বস্বতে পরিণত হয়েছে। আর এ সুযোগে “পদক্ষেপ” সংগঠনের ব্যানারে দখলবাজ ওয়াহেদ গংরা অফিসটি বাগিয়ে নেয়ার পায়তারা করার অংশ হিসেবে এই সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানার ওসি মোঃ আজিমুল করিম বলেন, বিষয়টি দেখবো। সেক্ষেত্রে ক্লাবটির উক্ত সাইনবোর্ড যদি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রমকে বির্তকিত করে তাহলে অবশ্যই তা কঠোর চোখে দেখা হবে। কারণ কমিউনিটি পুলিশিং মানুষের দোড়গোড়ায় পুলিশিংকে পৌঁছানোর একটি অন্যতম মাধ্যম।