আওয়ামীলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় মামলা না নেয়ায় থানা ঘেরাও অতঃপর ফরচুন সু মালিকের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২৩:৫১, জানুয়ারি ২০ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীতে ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগকে মারধর করে কাউনিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করে ফরচুন সু-কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান। এই ঘটনার জেরে অচল করে দেয়া হয়েছে বরিশালের সকল বাস স্ট্যান্ড। হামলাকারী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের দাবিতে মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এতে করে বরিশালে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ৬টা থেকে সর্বশেষ রাত ৯টা পর্যন্ত নগরীর দুই প্রবেশ দ্বারের টার্মিনালগুলো অবরোধ করলে বরিশাল থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা-ঝালকাঠী-বরগুনা-ভোলা-পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করায় পুলিশ প্রশাসন কিংবা মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো অনেকটা নিরুপায় হয়ে পড়ে। এতে করে সড়কের দু’পাশের কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানবাহনের লাইন পড়ে যায়। পরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের চাপে হামলাকারী ফরচুন সু-কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা নেয় পুলিশ। মামলায় আরো ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০/১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলা নং-১২। মামলার আসামিরা হলেন- ১. মিজানুর রহমান (৪৪) ২. মোঃ শফিক (৩০) ও ৩. রবিউল (৩২)। মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, সোহাগ এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী মোঃ সোহাগ হাওলাদারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বাকিতে ইট, বালু, রড ও সিমেন্টে ক্রয় করত ফরচুন সু কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান। পরে পাওনা টাকা চাইতে গেলে ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ খুনের হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তী উক্ত পাওনা টাকার বিষয়ে কাউনিয়া থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। উক্ত ঘটনার জেরে গতকাল বিসিসি’র ১ নং ওয়ার্ডস্থ কাউনিয়া বিসিক এলাকা দিয়ে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় মামলার বাদী আওয়ামীলীগ নেতা সোহাগকে অস্ত্র ঠেকিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করে ফরচুন সুজ কারখানার ভেতর নিয়ে যায়। এরপর মিজানের অপর দুই সহযোগী মোঃ শফিক ও রবিউলসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জন মিলে তাকে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে মিজানুর রহমান গুলি করতে চাইলে তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় জনগন এসে সোহাগকে উদ্ধার করে। পরে টহলরত পুলিশ ভুক্তভোগী ওই আওয়ামীলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে যায়। তবে ফরচুন সু-এর মালিক মো. মিজানুর রহমান জানান, তার কারখানার এক নারী শ্রমিককে বিসিক এলাকার মধ্যে উত্যক্ত করে সোহাগ। তিনি গাড়িতে কারখানার দিকে যাওয়ার সময় এ ঘটনা দেখে সোহাগকে আটক করে কাউনিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। এদিকে সোহাগের আটকের বিষয়টি মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জানতে পেরে থানায় গিয়ে মামলা নেয়ার জন্য পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিসিসি’র ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, থানা পুলিশের উপর কোন ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। আমাদের এক কর্মীকে অপহরণ করে নিয়ে তার উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির পক্ষে মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নিচ্ছিল না। এ কারণে আমরা বিষয়টি জানতে এসেছি। যদিও পরে ওসি মামলা নিয়েছেন। এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. ফজলুল করিম জানান, সোহাগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান, শফিউল সফিক, রবিউল সহ ১০/১২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করে এজাহার দাখিল হলে পুলিশ তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে এবং পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।