বরগুনায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুপিয়ে জখম যুবকের ৩৮ বছর কারাদণ্ড
দেশ জনপদ ডেস্ক|২২:৪৮, জানুয়ারি ২০ ২০২১ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। জানা যায়, গোপনে ঘরে ঢুকে ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ব্যর্থ হয়ে বাবা ও তার মেয়েকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ অভিযোগে এক যুবককে তিনটি অপরাধে ৩৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার চরলাঠিমারা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে ইয়াসিন (২২)। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আরও জানাযায়, গত ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর বাদী আবুল কালাম পাথরঘাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর ভাগিনী পাথরঘাটা বারী আজাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মানবিক শাখায় লেখাপড়া করে। আসামী ইয়াছিন বাদীর ভাগিনীকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত সহ বিয়ের প্রস্তাব দেন। বাদীর বোন দেলোয়ারা বেগম তার খালা জাহানারা বেগমের অসুস্থতার কারণে গত ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় সেখানে যান। রাতে বাদীর ভাগিনী তার বসত ঘরের বারান্দায় ঘুমায়। রাত আনুমানিক দুইটার দিকে আসামী ইয়াছিন পূর্বপরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে সংগোপনে স্কুল ছাত্রীর বাবা চাঁন মিয়ার বসত ঘরের পূর্ব পাশের দরজার দক্ষিণ পাশে জালানার লোহার সিক কৌশলে খুলে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন।
পরে ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষেণর চেষ্টা করেন। স্কুল ছাত্রীর ঘুম ভেঙে গেলে শব্দ পেয়ে তার বাবা চাঁন মিয়াকে ডাক দেয়। চাঁন মিয়া ইয়াছিনকে ধরে ফেলেন। এসময় ইয়াছিন চাকু দিয়ে চাঁন মিয়াকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বাম হাতের কব্জির রগ, বাম হাতের তালুতে এবং তালুর অপর পাশেসহ গলায় রক্তাক্ত জখম করেন। পরে চাঁন মিয়াকে রক্ষা করতে তার মেয়ে এগিয়ে আসলে ইয়াছিন চাকু দিয়ে ওই স্কুল ছাত্রীকেও খুনের উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এবিষয়ে পাথরঘাটা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। রাষ্ট্র পক্ষের এপিপি আশ্রাফুল আলম জানান, একটি জঘন্য মামলায় তিনটি ধারায় ইয়াসিনকে ৩৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজা ভোগ করলে ১৪ বছর কারাভোগ করলেই হবে।
তিনি আরও জানান, রাতের আঁধারে গোপনে ঘরে প্রবেশ করায় ১৪ বছর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১০ বছর ও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজা ভোগ করলে ১৪ বছর কারাভোগ করলে সাজা শেষ হবে। আসামী পক্ষের আইনজীবী আক্তারুজ্জামান বাবুলের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।