বরিশালে মুক্তিযোদ্ধাকে ডাকাত বলে আখ্যায়িত

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০০:৪৭, জানুয়ারি ১৯ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে প্রকাশ্যে এক মুক্তিযোদ্ধাকে ডাকাত বলে আখ্যায়িত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করায় ক্ষোভে উত্তাল বরিশাল জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন। যথাযথ সুরাহা না পেয়ে কর্মসূচি দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের ইউনিয়ন ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ। সূত্রমতে, বরিশাল সদর উপজেলার ১নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের ধর্ম্মাদী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক আকন গত ১৫ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টার সময় একই ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমজেদ খানের সাথে পপুলার স্টেশনের চায়ের দোকানে চা-পান করেছিলেন। এসময় দক্ষিণ কড়াপুরের বাসিন্দা এ্যাড. খায়রুল বাসার মানিক মুক্তিযোদ্ধা খালেক আকন ও আমজেদ খানকে উদ্দেশ্য করে সব মুক্তিযোদ্ধারা ডাকাত বলে আখ্যায়িত করে এবং প্রকাশ্যে আরো অশ্লীল ভাষায় তাদের বিষোদগার করে। এমন ঘটনার সময় পপুলার স্টেশনে প্রায় অর্ধ শতাধিক সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। জানা গেছে, এর আগেও এ্যাড. খায়রুল বাসার মানিক ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় নানান বিতর্কিত কর্মকান্ড ঘটিয়েছে। অনেক লোককে মিথ্যা মামলায় দিয়ে হয়রানি করিয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস দেখায় না। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক আকন জানান, আমি প্রায়ই চা খেতে পপুলারে আসি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা আমজেদ ভাইকে নিয়ে চা পান করতেছি। হঠাৎ করে এ্যাড. মানিক এসে আমাকে এবং আমজেদ খানকে উদ্দেশ্য করে নানান ধরনের কটুক্তি করে। তিনি আরো বলেন, মানিক আমার ছেলের বয়সি। আমার সাথে কোন বিরোধও নেই। হঠাৎ করে এমন আচরণ করায় আমরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি এবং সাথে সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ইউনিয়নের নেতাদেরও বলেছি। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাকে বিষোদগার করার সময় বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার এসআই সাইদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অন্য একটি অভিযোগের তদন্তের জন্য তার সামনে এ ধরনের নেক্কারজনক ঘটনা ঘটলে তিনি কোন আইনি পদক্ষেপও নেননি। এতে কড়াপুর ইউনিয়নের সচেতন মহলসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে উক্ত ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা কোন বিচার পায়নি। এ ব্যাপারে ১নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ সুলতান শরিফ দেশজনপদকে বলেন, আমি ঘটনা জানার সাথে সাথে উপজেলা কমান্ডারকে বিস্তারিত বলে দিয়েছি। এখন পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ তারা গ্রহণ করবে। এদিকে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আনছার আলী বলেন, খায়রুল বাসার মানিক মুক্তিযোদ্ধাদের কটুক্তি করে মারাত্মক অন্যায় করেছে। বিষয়টি আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে বলেছি। আজ সকাল ১০টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি। অপর দিকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ১নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কটুক্তিকারী খায়রুল বাসার মানিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এ্যাড. খায়রুল বাসার মানিকের ০১৭১৪....৬২৫ নাম্বারে ফোন দিলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কড়াপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।