নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগর পুলিশ-বিএমপির মাদকাসক্ত সদস্যদের কপাল পুড়ছে। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়েছেন ১৭ জন।
এদের মধ্যে চার কনস্টেবলকে এরই মধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আরও ১০ জনকে জনকে চাকরিচ্যুতি করার প্রক্রিয়া চলছে।
মাদক কেনা বেচার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ জন।
মাদকের বিষয়ে শূন্য সহনশীলতার নীতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: মাদকাসক্ত আরও আট পুলিশ চাকরিচ্যুত
বিএমপির উপ-কমিশনার (সদর) আবু রায়হান মো. সালেহ জানান, পুলিশের সন্দেহভাজন সদস্যদের ডোপ টেস্টের এই প্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছর অক্টোবরে। এরপর থেকে প্রতি মাসে দৈবচায়ন পদ্ধতিতে টেস্ট করা হচ্ছে।
গত ১৫ মাসে মোট ৪৮ জন পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ১৭ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অর্থাৎ তারা মাদকে আসক্ত।
এরপর পুলিশ এদের ওপর নজরদারি করে। তখন পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মাদক কেনাবেচার প্রমাণ মেলে। এদেরকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি ১২ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
উপ-কমিশনার জানান, মাদকাসক্ত সদস্যদের ধরতে পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে গোয়েন্দা নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ইউনিট প্রধানরা কাউকে সন্দেহ করলে তারা গোপনে কমিশনার কার্যালয়ে তালিকা পাঠান।
আরও পড়ুন: মাদকে আসক্ত ১০ পুলিশ চাকরিচ্যুত
তাদের কৌশলে ডেকে এনে মুখের লালাসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে ডোপ টেস্ট করা হয়।
কারও রিপোর্ট পজিটিভ হলে কিছুদিন পর আবার পরীক্ষা করা হয়। তখনও মাদক নেয়ার প্রমাণ মিললে তৃতীয়বার পরীক্ষা হয়।
এই প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি সর্বনিম্ন একজন সহকারী কমিশনার সম্পৃক্ত থাকেন।
পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করবেন। তারা কোনোভাবে মাদকে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন না। পুলিশ মহাপরিদর্শকের নির্দেশনা রয়েছে এমন কাউকে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নিতে হবে। সে অনুযায়ী সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের প্রতি মাসে নিয়মিত ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে।’
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল মহানগর পুলিশে কনস্টেবল থেকে কমিশনার পর্যন্ত প্রায় এক হাজার সাতশ সদস্য কর্মরত আছেন।
মাদক সেবনের বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় গত ২২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের ১০ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে তাদের কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এরপর ৩০ নভেম্বর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত সংবাদ সম্মেলন করে আট পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের মধ্যে দুই জন উপপরিদর্শক (এসআই)। এরা হলেন হামিদুর রহমান ও নাজিম উদ্দিন।
আরও দুই জন আছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। এরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ও নাঈম মাহমুদ।
বাকি চার জন কনস্টেবল। এরা হলেন বিপ্লব হোসেন, সাইফুল ইসলাম, নাহিদ হাসান ও মাজহারুল ইসলাম।