সর্বগ্রাসী দুর্নীতি…… শুদ্ধি অভিযান আবার শুরু করতে হবে

কামরুন নাহার | ০০:০৯, জানুয়ারি ২৪ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল অভিযান। প্রথম দুই মাসে প্রায় ৫০টি অভিযান পরিচালনা করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। তারপর যেন হঠাৎ করেই ভাটা পড়েছে অভিযানে। যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছিল, তা সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছিল এ কারণেই যে অভিযান চালানো হয়েছিল সরকারি দলের মধ্যেই। রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে বা রাজনীতিকে ব্যবহার করে হঠাৎ বিপুল বিত্তের অধিকারী হওয়া সমাজের কিছু মানুষের কারণে সরকার সমালোচিত হচ্ছিল। শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ায় সমালোচকদের মুখ বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু অভিযান এখন আর কার্যকর না থাকায় অনেকেই নতুন করে সমালোচনায় মুখর। যদিও এবারের অভিযানের প্রাপ্তি একেবারে কম নয়। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ ক্যাসিনো কারবার ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। যাঁদের কাছে এই অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে তাঁঁদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান শুরু হওয়ার পর আরো প্রায় ৪০০ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আদালতের নির্দেশে অনেকের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। অনেক সন্দেহভাজন ক্যাসিনো কারবারি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। আবার বিদেশে পালিয়ে থাকা কেউ কেউ দেশেও ফিরেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোবিরোধী দৃশ্যমান অভিযান নেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হচ্ছে, সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছে তারা। নতুন তালিকা ধরে আবার অভিযান শুরু হবে। আরেকটি খবরে বলা হয়েছে, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি এবং ১০ পরিচালকের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ এবং সব সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এক পরিচালকের মা, স্ত্রী, ভাই, দুই কাজিনসহ একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সাবেক এমডির ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ এবং সব সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশ ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁদের গত পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্ন হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার কথা বলে আসছেন। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকেও বলা হচ্ছে, শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকবে। এই অভিযান আবার নতুন করে দৃশ্যমান হওয়া দরকার। নতুন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালিত হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।