স্ত্রীকে নির্যাতন করে কান ফাটিয়ে দিলেন সুন্দরবন লঞ্চের সুপারভাইজার

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:২০, জানুয়ারি ০৫ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ যৌতুক দাবী, পরকীয়া ও ইয়াবা সেবনে বাঁধা দেয়া স্ত্রীর উপর অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেন বিরুদ্ধে। গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় আনোয়ার তার স্ত্রী আরজু আক্তারের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এ সময় আনোয়ার স্ত্রী আরজুকে থাপ্পড় দিয়ে বাম কান ফাটিয়ে দিয়েছে। নির্যাতিতা আরজু বেগম তার লিখিত অভিযোগে জানান, ২০০৭ সালের ২৩ ফেব্র“য়ারী রাজাপুরের বাদুরতলা গ্রামের এসহাক আলীর ছেলে আনোয়ারের সাথে পারিবারিকভাবে নগরীর শেরে-ই-বাংলা সড়কের আনোয়ার হাওলাদারের মেয়ে আরজু বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আরজু জানতে পারে তার স্বামী একাধিক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত রয়েছে। আরজু বিভিন্ন সময় তার স্বামী আনোয়ারকে এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে বলে। কিন্তু আনোয়ার তাতে কোন কর্নপাত করেনি। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে ঝগড়া-বিবাদ হয়। একপর্যায়ে আনোয়ার স্ত্রী আরজুর নিকট মোটা অংকের যৌতুক দাবী করে। দাবীকৃত যৌতুক না দেয়ায় আরজুর উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আনোয়ার। তবে নিজের ঘর সংসারের কথা চিন্তা করে আরজু তার স্বামী সংসার করে। এছাড়া আনোয়ার নগরী, ঢাকা ও রাজাপুরের বিভিন্ন হোটেলে মেয়ে নিয়ে থাকাকালীন সময় ধরা পড়ে। গত বছর খানেক পূর্বে গ্রামের বাড়িতে আনোয়ার এক মেয়ে নিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় এলাকাবাসীর নিকট আটক করে। এসময় এলাকাবাসী আনোয়ারকে গণধোলাই দেয়। এ নিয়ে আনোয়ার ও আরজুর পরিবার একাধিকবার শালিশ-মিমাংশা করে দিলেও কোন কাজে আসেনি। উল্টো আনোয়ারের মা আরজুকে দোষাপোর করে। এছাড়া আরজু আরো জানান, আনোয়ার মাদক সেবন থেকে শুরু করে জুয়া খেলায়ও মত্ত থাকে। মাদক সেবন করে বাসায় এসে আরজুর সাথে প্রায় সময় ঝগড়া ও মারধর করে। উল্লেখ্য সংসারে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ওই দুই সন্তানই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। এসকল বিষয় নিয়ে বর্তমানে আরজু চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। অপরদিকে আনোয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। ঘটনার দিন গত রবিবার রাতে নগরীর সাগরদীর ভাড়া বাসায় আনোয়ার ইয়াবা নিয়ে যায়। বাসায় বসে ইয়াবা সেবনের বাঁধা দেয় আরজু। এক পর্যায়ে আনোয়ার স্ত্রী আরজুকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এছাড়া থাপ্পড় দিয়ে তার কান ফাটিয়ে দেয়। স্থানীয়রা আহতকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে আরজুহাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার কানে আঘাত মারাত্মক সমস্যা হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আনোয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার। এছাড়া আমি বড় লঞ্চ কোম্পানী সুন্দরবন নেভিগেশনে কাজ করি। আপনাদের নিকট লিখিত অভিযোগ থাকলে সংবাদ প্রচার করতে পারেন। এ বিষয়ে সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, আমার কোম্পানিতে চারশ’র বেশি স্টাফ আছে। ইয়াবা সেবন, মাদক, স্ত্রীকে নির্যাতন এগুলা পারিবারিক বিষয়। এখানে আমার কোন মন্তব্য নেই।