বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

কামরুন নাহার | ২৩:২৫, জানুয়ারি ২৩ ২০২০ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের হাত থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে আরও উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই এবং দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের হাত থেকে মুক্ত করতে চাই।’ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার স্বর্ণদ্বীপে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়া উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্রীতিভোজে’ (মধ্যাহ্নভোজ) বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশন এই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার চায় সাধারণ মানুষ শান্তিতে, নিরাপদে এবং উন্নত জীবনযাপন করবে। ‘সেই লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আধুনিক, উন্নত ও সুসজ্জিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে তারা আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। ‘আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার একটি মহান কাজ সশস্ত্র বাহিনীর ওপর ন্যস্ত। তাই আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ ও তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে সুসজ্জিত করার পদক্ষেপ নিয়েছি যাতে তারা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে পারে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কাজের অংশ হিসেবে সংঘাতপূর্ণ বিভিন্ন দেশে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই, তাদের অন্যান্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে কাজ করতে হয়। তাই আমরা চাই না যে তারা পিছিয়ে পড়ুক।’ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী দেশের উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রাখছে বলে জানান শেখ হাসিনা। এর আগে নোয়াখালির হাতিয়া উপজেলার স্বর্ণদ্বীপে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন সামরিক মহড়া ‘অপারেশন বিজয় গৌরব’ প্রত্যক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় এই মহড়ার আয়োজন করে ৬৬ পদাতিক ডিভিশন। স্বর্ণদ্বীপে তিন সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বিত অভিযান প্রদর্শনের জন্য ঘন্টাব্যাপী এই মহড়ায় যোগ দেয় নৌ ও বিমানবাহিনীর ইউনিটগুলো। তিন সশস্ত্র বাহিনীর ট্যাঙ্ক, এপিসি, মিগ যুদ্ধ বিমান ও এমআই হেলিকপ্টারসহ আধুনিক বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ঘন্টাব্যাপী এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সেনাবাহিনী এবং ‘শত্র“ বাহিনীর’ মধ্যে একটি প্রতীকী যুদ্ধ প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জয়ের মধ্য দিয়ে অভিযানটি শেষ হয়। সেনাবাহিনীর ২২২ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব সশস্ত্র বাহিনীর বিজয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন এবং পরে তিনি সশস্ত্র বাহিনীকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান। এসময় তিন বাহিনীর প্রধান, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে স্বর্ণদ্বীপে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার (জিওসি) মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম এবং ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লে. জেনারেল মো: শামসুল হক এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীকে স্বর্ণদ্বীপের উন্নয়ন সম্পর্কে অবহিত করেন। দ্বীপে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত তিনটি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার, পরিকল্পিত বনায়ন প্রকল্প ও এক মেগাওয়াটের একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।