খাপাড়াভাঙ্গা নদীতে দখল দৌরাত্ম্য ॥ আশ্রয় ও কৃষিকাজে বিপর্যয়ের শঙ্কা
দেশ জনপদ ডেস্ক|২৩:০০, নভেম্বর ২১ ২০২০ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেদের দুর্যোগকালীন নিরাপদ আশ্রয়স্থল খাপড়াভাঙ্গা নদীর তীর দখল কোন কিছুতেই থামছে না। এমনিতেই পলিতে ভরাট হওয়া এ চ্যানেলটি রক্ষায় জেলেরা খননের দাবি করে আসছেন। সেটি কার্যকর না হয়ে উল্টো তীর ভরাট করে দখল দৌরাত্ম্য চলছে ফ্রি-স্টাইলে। নদীর ওপর শেখ কামাল সেতুর নিচে ইতোমধ্যে একটি স্থাপনা করা হয়েছে। এখন ঘাট নির্মাণ হচ্ছে।
নদীর মৎস্যবন্দর আলীপুর অংশে বর্তমানে এসব দখলকাজ চলছে। এ নদীটিকে স্থানীয়রা শিববাড়িয়ার চ্যানেলও বলে থাকেন। দুই দিক থেকে নদীটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার সঙ্গে মিলেছে। জেলেরা দুইদিক থেকেই সাগরে মাছ শিকারে যায়। তবে আন্ধারমানিক নদীর মোহনার অংশ দিয়ে শতকরা ৯৫ ভাগ জেলে গভীর সমুদ্রে চলাচল করে আসছে। কিছু জেলে আশাখালি অংশ দিয়ে রাবনাবাদ মোহনা হয়ে সাগরে প্রবেশ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে এ নদীটি ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। খাপাড়াভাঙ্গা নদীর তীরে রয়েছে মহিপুর, আলীপুর মৎস্যবন্দর। এছাড়াও লক্ষ্মীর হাট, চাপলীর হাট ও আশাখালীর ঘাটসহ কয়েকটি ঘাট এবং বাজার রয়েছে। এসব বাজার ঘেঁষা এলাকায় নদীর তীর দখল করে স্থাপনা তোলা হয়েছে। বহুবছর আগে এ নদী তীরের কিছু স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে।
কিন্তু নদীটির সীমানা চিহ্নিত করে পিলার দেয়া হয়নি। ফলে ফের নদীসহ নদীর তীর এবং ভরাট অংশ দেদার দখল চলছে। অতি সম্প্রতি আলীপুর বাজার অংশে একটি ঘাট নির্মাণ করতে নদী তীরের পাইলিং দিয়ে ভরাট-দখল চলছে। এছাড়া শেখ কামাল সেতুর নিচে নদী তীরে একটি পাকা স্থাপনা তোলা হয়েছে। স্থানীয় ভূমি প্রশাসন এটি দেখভালের কাজ করার কথা থাকলেও তারা উদাসীন রয়েছেন। হাজারো জেলে ও মৎস্যজীবীর জীবন-জীবিকার অবলম্বন খাপড়াভাঙ্গা নদীটি রক্ষায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ দ্রুত নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন জেলে ও মৎস্যজীবীগণ। শুধু জেলে নয়, এ নদীর দুই পাড়ে অন্তত ১২ টি স্লুইস সংযুক্ত খাল রয়েছে যা বন্ধ হয়ে হাজার হাজার কৃষকের কৃষিকাজের ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেয়ার শঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, নদী দখল বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, এ নদীটি পুনঃখননের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি টিম আট/নয় বছর আগে কয়েক দফা সমীক্ষা চালিয়েছে। পরিদর্শন করেছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।