সংশোধনের ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও এনআইডি কার্ডধারীরা

কামরুন নাহার | ২৩:৫৫, জানুয়ারি ১৯ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সংশোধনের গেড়াকলে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এনআইডি কার্ডধারীরা। প্রায় ৮/১০ পদের প্রমাণপত্রাদি তৈরী করে মাসের পর মাস ঘুরেও কুল কিনারা হচ্ছেনা ভুক্তভোগীদের। বরিশাল বোর্ড ও সদর উপজেলা নির্বাচন দপ্তরে গিয়ে জনভোগান্তির এমন চিত্র দেখা গেছে। সুত্রে জানা গেছে, নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম ও বয়স সংশোধনের আবেদনই বেশি জমা হয় বোর্ড ও নির্বাচন দপ্তরে। এ ব্যপারে ভুক্তভোগী আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি গত একবছর ধরে নির্বাচন দপ্তরে ঘুরছি আমার এনআইডি কার্ড সংশোধনের জন্য, কারণ আমার পিতার নাম ভুল এসেছে। আর এজন্য আমাকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সনদ, অষ্টম শ্রেনী পাসের সনদ, পিতার আইডি কার্ড কপি, ব্যাংক ড্রাফট ফি, এভিডেভিটসহ ৮/১০ ধরণের কাগজপত্রাদি জমা দিতে হয়েছে। এরপরও কোন সুরাহা করতে পারিনি। নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলে বলে, আপনার মোবাইলে মেসেজ আসবে কিন্তু একবছর পার হলেও কোন মেসেজ আসেনি। শুধু তাই নয়, দপ্তরটিতে গিয়ে এমনও দেখা যায় যে, যেসকল আবেদনকারীরা কম্পিউটার অপারেটরদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরটা স্বল্প সময়ের মধ্যেই হয়ে যায়। এনিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন সন্তানদের ভর্তি করতে গেলেও পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি চায় এছাড়া দলিল করতে কিংবা অন্যান্য সুবিধাদির ক্ষেত্রেও এটির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে একবছর ধরে আমি খুব জটিলতর অবস্থা পার করতেছি এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে না পেরে। সুত্রে জানা গেছে, এনআইডি কার্ড সংশোধনের জন্য দৈনিক প্রায় অর্ধশত আবেদন জমা পরে। আবেদনকারীদের আবেদন উপজেলা অফিসে শুনানি শেষে ঢাকায় প্রেরণ করা হয় অনলাইনের মাধ্যমে। এরপর সার্ভারে মুল কাজটি করা হয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে। এ ব্যাপারে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: মান্নান বলেন, আমাদের দপ্তর থেকে কাগজপত্রাদি যাচাই-বাছাই ও শুনানি শেষে ঢাকায় ডকুমেন্টসগুলো পাঠানো হয় এরপর চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে অনলাইনে সংশোধন দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে দেরি হতে পারে কারন সারাদেশ থেকে আবেদনগুলো জমা পরে আবার তাদের কাছে ভুল ত্র“টি ধরা পরলে তাও সংশোধন করে পাঠাতে হয়। তবে এখন আগের চেয়ে অনেক গতি বেড়েছে সংশোধন প্রক্রিয়ায়। এদিকে বরিশাল বোর্ডেও সংশোধনীর ভোগান্তি কম নয়। প্রতিদিন অন্তত ৩০/৪০ জন শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাগত সনদের সংশোধনীর জন্য আবেদন করেন। এক্ষেত্রে একেকজন শিক্ষার্থীকে চেয়ারম্যান সনদ, চেয়ারম্যান থেকে নামের সঠিক বানানের প্রত্যয়ন, পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড, ব্যাংক ড্রাফট, এভিডেভিট, প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যায়ন, ভর্তি রেজিস্টারের কপি, অনলাইনে আবেদনসহ প্রায় ১০/১২ ধরণের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করে বোর্ডে জমা দিতে হয়। সকল কাগজপত্রাদি জমা দিয়েও একেকজন শিক্ষার্থীকে বোর্ডের কলেজ ও স্কুল সেকশনে ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। এনিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নেয়ামুল করিম বলে, আমার এসএসসি সার্টিফিকেটে বাবার নামে আব্দুল দিয়েছি কিন্তু এইচ এসসি সনদে আব্দুল নেই এটি সংশোধন করতে গিয়ে অনেকবার বোর্ডে এসেছি, এখনও আসছি। কারণ উল্লেখ করে তিনি আরো বলে, একেকদিন একেকজন অফিসার থাকেনা আবার থাকলেও মিটিংয়ে রয়েছে তাই আজ আর স্বাক্ষর হবেনা। এ ব্যপারে বরিশাল বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: ইউনুস বলে, কোন শিক্ষার্থী যদি এধরণের ভোগান্তিতে পরে তাহলে সরাসরি আমার কাছে আসলেই হবে। কারন আমার রুমে আসতে কোন প্রকার বাঁধা পেরোতে হয়না। এছাড়া বিষয়টি শুনেছি যেহেতু সেকশনে নির্দেশ দেয়া হবে যাতে এ ধরণের বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা হয়। এসময় তিনি আরো বলে, রেজিস্ট্রেশনের সময় স্কুলগুলো যদি এই বানানগুলো সঠিকভাবে দেয় তাহলে শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তির শিকার হতে হয়না। আমরা বিভিন্ন মিটিংয়ে শিক্ষকদেরকে বারবার এ বিষয়ে বলেও থাকি যাতে রেজিস্ট্রেশনে কোন প্রকার তথ্যাদির বানান ভুল না হয়। উজিরপুরে অসহায় পরিবারের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি জোরপূর্বক দখল করেছে ভূমিদস্যুরা সর্বশান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে দ্বারে দ্বারে উজিরপুর প্রতিনিধি ॥ বরিশালের উজিরপুরে অসহায় পরিবারের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি জোড় পূর্বক দখল করেছে ভূমিদস্যুরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বশান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মোড়লদের দ্বারে দ্বারে। ভূক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায় উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ মোড়াকাঠী গ্রামের আর্শেদ আলী হাওলাদারের মৃত্যুবরণ করার পরে তার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হন তার ছেলে নুরুল ইসলাম, সামছুল হক হাওলাদার, ফজলুল হক হাওলাদার, হারুন অর রশিদ হাওলাদার, ফাতেমা বেগম, খাদিজা বেগম। ২৫ বছর পূর্বে বড়ভাই নুরুল ইসলাম, হাওলাদার ও ছোট ভাই হারুন অর রশিদ হাওলাদার মিলে ফজলুল হক হাওলাদার ও খাজিদা বেগমের কাছ থেকে জোড় পূর্বক একটি অলিখিত ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন সময় ফজলুল হক হাওলাদার বাড়ীতে আসার জন্য ভাইদের কাছে ফোন করে কাকুতি মিনতী করলে তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দেয় সেই ভয়ে সে এলাকায় নিজ বাড়ীতে আসতে সাহস পাচ্ছে না । কিছুদিন পূর্বে ফজলুল হক স্থানীয়দের কাছে আশ্রয় নেয় এবং শালিশীর মাধ্যমে তার পৈত্রিক আত্মস্বাতকৃত জমি ফেরত পাওয়ার দাবী জানান। আরো জানা যায় কামিনউদ্দিন হাওলাদার সি,এস রেকর্ড মূলে মালিক থাকায় তার প্রথম স্ত্রী ময়ফুল বিবির গর্ভজাত পুত্র আর্শেদ আলী, মাজেদ আলী কন্যা অমৃতজান বিবি, শরফজান বিবি। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পড়ে তিনি লালমন বিবিকে বিবাহ করেন। তার গর্ভজাত সন্তান হামেদ হাওলাদার, হায়াতুন নেছা, আফছারুন নেছা ওয়ারিশ সূত্রে এস.এ রেকর্ড মূলে জমির মালিক হন। এরপর আর্শেদ আলী হাওলাদারের সন্তানরা ওয়ারিশ মূলে জমির প্রকৃত মালিক হন। এব্যাপারে ভুক্তভোগী ফজলুল হক হাওলাদার ও খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের কান্নার কন্ঠে জানান আমরা অসহায় হওয়ায় আমাদের পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ভিটেমাটি ও বসতঘর জোড়পূর্বক একটি ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকী দিয়ে বাড়ী থেকে তারিয়ে দিয়েছে ওই ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীরা। আমরা ২৫ বছর যাবত তাদের ভয়ে ঢাকায় বসবাস করছি। এমনকী বি.এস পরচায় আমাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করেনি। অভিযুক্ত নুরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওই ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন অসহায় পরিবার । উজিরপুরের কালিহাতায় ফের বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াড়ী ও চোরচক্ররা উজিরপুর প্রতিনিধি ॥ বরিশালের উজিরপুরের কালিহাতায় ফের বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াড়ী ও চোরচক্ররা, আতঙ্কে এলাকাবাসী। প্রতিদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা ও মাদক সেবিদের আড্ডা প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা। একটি সূত্রে জানা যায়, বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা গ্রামে বিভিন্ন নির্জন স্থানে স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে প্রতিদিন বখাটে ও মাদক সেবীরা আড্ডা জমায়। স্থানীয়রা জানান প্রতিদিন রাতে বহিরাগতরা মোটর সাইকেল যোগে এসে হুট করে থামিয়ে মাদক সেবীদের কাছে মাদক বিক্রি করে দ্রুত চলে যায়। বিভিন্ন পরিত্যাক্ত ঘরে জুয়ার আসর বসায়। এমনকী বর্তমানে ভিন্ন পন্থায় চলছে নানাবিধ জুয়া। এর মধ্যে টেলিভিশনের পর্দায় ক্রিকেট খেলা দেখার নামে কালিহাতা গ্রামের বিভিন্ন মুদি ও চায়ের দোকানে কিশোর বয়সী ছেলেরা জুয়া খেলার আসরে মেতে উঠেছে। এমনকী লাছা তাস খেলার নামে চলছে লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া। ইতিপূর্বে কালিহাতা এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের গ্রেফতার করার পরে এলাকা কিছুটা শান্ত হলেও বর্তমানে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীরা। প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা। চুরি, ডাকাতি, জুয়া ও মাদক মুক্ত রাখতে পুলিশের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন কালিহাতাবাসী।