বরগুনায় খেলার মাঠ নষ্ট করে দোকান নির্মাণ, এলাকাবাসীর ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনার বামনা উপজেলায় স্কুলের সৌন্দর্য ও খেলার মাঠ নষ্ট করে তৈরি করা হচ্ছে দোকানঘর। জানাযায়, বরগুনার বামনা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামনা শের-ই-বাংলা বহুমুখী সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নষ্ট করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ও সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান নাবিলের বিরুদ্ধে। সাবেক একাধিক শিক্ষার্থী এর প্রতিকার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করছেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযোগ পত্রও দাখিল করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সামনে মনোরম পরিবেশে খেলার মাঠ রয়েছে। মাঠের দক্ষিণ পাশ দিয়ে রামনা লঞ্চঘাট ও ডৌয়াতলা বাজার গামী একটি সড়ক রয়েছে। সড়কের পাশেই খেলার মাঠ নষ্ট করে দোকান ঘর নির্মাণ করার জন্য একাধিক তাল গাছ কর্তন করা হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দোকান ঘর নির্মাণে বাধা প্রদান করেছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিদ্যালয়-কাম-সাইক্লোন শেল্টারের দ্বিতীয় তলা দখল করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠ দানে বিঘœ এবং দুর্যোগে আশ্রয় নিতে সাধারণ জনগণের অসুবিধাও হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ সবুজ বলেন, যেখানে বর্তমান সরকার তালগাছ রোপণের জন্যে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোটা অংকের বরাদ্দ করেছে এবং ইতিমধ্যে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করাও হয়েছে, সেখানে কি করে স্কুলের তালগাছ কেটে দোকান ঘর তৈরি করা হচ্ছে। তাছাড়া স্কুলের মাঠ বিনষ্ট হচ্ছে। এতে শিশুদের বিনোদনে বিঘœ ঘটবে। তিনি আরও বলেন, সাইক্লোন শেল্টার মানুষের দুর্যোগের আশ্রয়স্থল। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং তার পরিবার অনেকগুলো রুম দখল করে বসবাস করে করছেন। এসব বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জিজ্ঞেস করলেও তিনি কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা এলাকাবাসী এসব অনিয়ম ও অসামাজিক কাজ থেকে পরিত্রাণ চাই। সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, আসলে এই স্কুলের মাঠটি অত্যন্ত ছোট, তারপরেও যদি আবার এখানে দোকান ঘর তোলা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হবে। এবং আমি মনে করি এটা তাদের খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি আরও বলেন, বিগত দিনগুলোতে এই স্কুলের অনেক সুনাম ছিলো। এখন তা দুর্নামে পরিণত হয়েছে। শুধু দুর্নামই নয় এই স্কুলে মোটা অংকের নিয়োগ বাণিজ্য ও অসামাজিক কাজও হচ্ছে। এলাকার সুশীল সমাজ এসব অনিয়ম থেকে মুক্তি ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছেন। রামনা শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন এসব বিষয় এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বিদ্যালয়ের আয়ের স্বার্থে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন করে দোকান ঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া স্কুলের মাঠে যখন ছাত্রদের পিটি করানো হয় তখন ছাত্রীরা বখাটেদের ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। স্কুলের স্বার্থেই এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, অন্য কোন স্বার্থে নয়। জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নষ্ট করে দোকান ঘর নির্মাণ করা যাবেনা এবং বিদ্যালয়-কাম-সাইক্লোন শেল্টারের রুম দখল করে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রধান শিক্ষকও থাকতে পারবেন না। এ ব্যাপারে এখনও আমি অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বামনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা সুলতানা জানান, আমি মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলেছি। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।