পাথরঘাটায় এমপির নির্দেশে মন্দির ভাংচুর

কামরুন নাহার | ১৭:০৯, জানুয়ারি ১৫ ২০২০ মিনিট

  মো. মিরাজ, বরগুনা ॥ বরগুনা-২ (বামনা-পাথরঘাটা-বেতাগী) আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে এক যুবককে মারধর এবং একটি সংখ্যালঘু পরিবারের মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার ১২ জানুয়ারি দুপুরে পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার যুবকের নাম তাইমুল ইসলাম। এ বিষয়ে রবিবার রাত ৮টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য করেননি সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চরদুয়ানী এলাকায় প্রিয়াঙ্কা মিত্রের পৈত্রিক সম্পত্তির ওপর পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইস গেট নির্মাণ করতে চায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রিয়াঙ্কার পরিবার আদালতে গেলে, আদালত প্রথমে একটি উকিল কমিশন ও পরবর্তীতে বাদী-বিবাদীর সমন্বয়ে জমির ওপর জরিপ করে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত শনিবার ১১ জানুয়ারি উভয়পক্ষের অ্যাডভোকেট চরদোয়ানী এলাকার ওই জমিতে জরিপ করতে গেলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জাকির বিশ্বাস, শাহিন মুন্সি, রাকিব মুন্সি, ফারুক হাওলাদার, আতিকুর রহমান লাবুসহ কয়েকজন প্রিয়াঙ্কা মিত্রের পারিবারিক বন্ধু তাইমুল ইসলামকে মারধর করেন। তারা প্রিয়াঙ্কা মিত্রের পরিবারকে হুমকি-ধমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রিয়ঙ্কার দাবি, গত রবিবার ১২ জানুয়ারি সকালে চরদুয়ানী এলাকায় পুনরায় তাইমুল ইসলামকে বেঁধে আনতে যায় এমপির অনুসারীরা। এরপর এমপির কথায় তাইমুল ইসলাম থানায় গেলে থানার ভেতরে বসে তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন এমপি রিমন নিজেই। কিন্তু তাইমুল এ নির্দেশ না শোনায় দুপুর দেড়টার দিকে চরদুয়ানী এলাকায় তাকে আবারও দেখতে পেয়ে এমপি রিমনসহ তার ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা মারধর করেন। প্রিয়াঙ্কা মিত্র দাবি করেন, আমাকে সহযোগিতা করার কারনেই তারা তাইমুলকে মারধর করেছে। এসময় আমাদের মন্দিরও ভাঙচুর করেছে। আমি এর বিচার চাই। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবির হোসেন মারধরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এমপি নিজ হাতে তাকে ঘুষি মারেন এবং লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। একপর্যায়ে  তাইমুল হুমড়ি খেয়ে আমার পায়ের কাছে এসে পড়লে আমি তাকে পাথরঘাটায় পাঠিয়ে দেই। মন্দির ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালের পারে অবস্থিত একটি মন্দিরেও হামলা করেছেন এমপির লোকজন। তবে ভাঙচুরের কথা বলতে পারবো না। এবিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন বলেন, কেউ থানায় অভিযোগ করতে আসেনি। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেছে কিনা তাও আমি জানি না। এ বিষয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, ওই ছেলে যেহেতু এই এলাকার না তাই তাকে পাথরঘাটা ছেড়ে চলে যেতে বলেছি। তবে তাকে কেন মারধর করা হয়েছে এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি সংসদ রিমন।